সিলেটে বালিহাঁসসহ ২৫টি পাখি উদ্ধার, শিকারিকে র‌্যাবে সোপর্দ

ক্রেতা সেজে শিকারির কাছ থেকে উদ্ধার করা বালিহাঁস। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট নগরীর কুমারপাড়ায়
ছবি: আনিস মাহমুদ

সিলেট নগরীর ৩টি স্থান থেকে ১টি ময়না পাখি, ৪টি সাদা বক ও ২০টি বালিহাঁস উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক শিকারিকে আটক করে র‌্যাবে সোপর্দ করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সদস্যরা পাখি কেনাবেচার বিরুদ্ধে এই তৎপরতা চালান। তাঁদের সঙ্গে বন বিভাগের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের কর্মীরাও ছিলেন।

বাপার সদস্যরা জানান, দুপুর ১২টায় সিলেট নগরীর ব্যস্ততম এলাকা মিরাবাজারে চারটি বক নিয়ে এক ব্যক্তি ঘুরছিলেন। তাঁকে কাছে ডেকে বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী তাঁর ফেসবুক থেকে লাইভ সম্প্রচার করেন। সেটি দেখে তাৎক্ষণিক ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কল করেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি জানান, ময়না পাখিসহ বালিহাঁস বিক্রি চলছে নগরীর ভার্থখলায়।

বন বিভাগের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের একটি দল নিয়ে বাপার সদস্যরা সেখানে গিয়ে একটি ময়না ও চারটি বালিহাঁস উদ্ধার করেন। বিক্রেতা প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাঁকে মুচলেকা দিয়ে তাঁর কাছ থেকে শিকারির মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করা হয়। এরপর ক্রেতা সেজে শিকারিকে ফোন দিলে বিকেল চারটায় কুমারপাড়া এলাকায় একটি ঝাঁপিতে করে ১৬টি বালিহাঁস নিয়ে আসেন। তাঁর নাম জিতু মিয়া। বালিহাঁসসহ জিতু মিয়াকে র‌্যাব-৯-এ সোপর্দ করা হয়।

এর আগে বাপার সদস্যরা নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় রাতে পাখি কেনাবেচার হাট শনাক্ত করেছিলেন। সেখানে ১৪ অক্টোবর রাতে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভগের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ১৯টি সাদা বক ও ১৮টি কানি বক উদ্ধার করা হয়। ১৭ অক্টোবর নগরীর শাহি ঈদগাহ এলাকায় বাপা সদস্যদের দেখে আটটি বক ফেলে পালিয়েছিলেন শিকারি।

বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানুষকে সচেতন করতে ফেসবুকে লাইভ করেছিলাম। লাইভ চলাকালে দুটো স্থান থেকে খবর পেয়ে সেখানে যাই। একপর্যায়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সাবেক সভাপতি এনামুল মুনীর ক্রেতা সেজে পাখিশিকারিকে হাতেনাতে ধরেন। ফেসবুকে লাইভের সূত্র ধরে দুটো স্থানে পাখি কেনাবেচার বিরুদ্ধে বন বিভাগকে নিয়ে অভিযান হয়েছে।’

পাখি কেনাবেচা ঠেকাতে অভিযানের জন্য বাপা সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বন বিভাগের সিলেট টাউন রেঞ্জার মো. শহিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, প্রচলিত আইন নিয়ে নিয়মিত নজরদারির পরও সিলেট শহরে পাখি শিকার ও বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না। শীতকালে আরও বেশি বেড়ে যায়। এই সময়ে বাপার এই স্বেচ্ছাসেবী ভূমিকা অভিনন্দনযোগ্য। উদ্ধার করা সাদা বক ও বালিহাঁস যথাযথ স্থানে অবমুক্ত করা হবে।