সিলেটে শহরকেন্দ্রিক হোটেলে পর্যটকদের বুকিং বেশি, রিসোর্টে কম

জল আর বনের মিতালি দেখা যায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাতারগুলেছবি: আনিস মহমুদ

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সিলেট শহরের আবাসিক হোটেলগুলোতে পর্যটকেরা অগ্রিম বুকিং করতে শুরু করছেন। ঈদের ছুটিতে হোটেলগুলোতে পর্যটকদের সমাগম ভালো হবে বলে আশা করছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। তবে শহরতলির রিসোর্টগুলো পর্যটকদের তেমন সাড়া পাচ্ছে না বলে জানা গেছে। রিসোর্টের মালিকেরা বলছেন, ভারতীয় ভিসা চালু হওয়ায় অনেক পর্যটক ভারতের দিকে ছুটছেন। এতে রিসোর্টে পর্যটকদের আকর্ষণ কমছে।

জেলার হোটেল, মোটেল ও পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ৪ থেকে ৬ মে পর্যন্ত শহরের হোটেলগুলোর অর্ধেকের বেশি কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। এ ছাড়া এখনো পর্যায়ক্রমে অনেকেই বুকিং করছেন। বেশির ভাগ পর্যটকেরাই ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে আসবেন বলে জানা গেছে।

পর্যটকদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল
ছবি: আনিস মাহমুদ

নগরের আম্বরখানা এলাকার ব্রিটানিয়া হোটেলের ব্যবস্থাপক (বিপণন) কাওসার খান বলেন, এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশের বেশি কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। এখনো অনেকে যোগাযোগ করে অগ্রিম বুকিং করছেন। আবার অনেকে টিকিট নিশ্চিত না হওয়ায় একটু সময় নিচ্ছেন। যাঁরা অগ্রিম বুকিং করছেন, তাঁদের বেশির ভাগই সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি চাকরিজীবী। ঈদের ছুটিতে সব কক্ষই পরিপূর্ণ থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সিলেটের একটি আবাসিক হোটেলে অগ্রিম বুকিং করেছেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা এ কে আজাদ। তিনি বলেন, ‘এবার ঈদের ছুটি কিছুটা লম্বা। এই সুযোগে পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে সিলেটে ঘুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা করে রেখেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে ৪ মে সিলেটে পৌঁছে হোটেলে উঠব।’

তবে শহরতলির রিসোর্টগুলোতে উল্টো চিত্র দেখা গেছে। আকর্ষণীয় বিভিন্ন অফারের ঘোষণা দেওয়া হলেও পর্যটক টানতে পারছে না রিসোর্টগুলো। এবারের ঈদে গত দুই বছরের ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার আশা করেছিলেন রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা। তবে পর্যটকদের সাড়া না পেয়ে তাঁরা এখন হতাশ।

সিলেট ভ্রমণে গেলে পর্যটকেরা মাজারগুলো ঘুরে দেখেন
ছবি: আনিস মাহমুদ

সিলেটের নাজিমগড় রিসোর্টের মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) খায়রুল আনাম প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত রিসোর্টের প্রায় ২৫ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়েছে। কিন্তু করোনার আগে এমন সময়ে রিসোর্ট জমজমাট থাকত। এখনই সিলেটের পর্যটকদের মৌসুম। এই সময়ে সিলেটের বেশির ভাগ পর্যটনকেন্দ্র স্বরূপে ফিরে আসে। কিন্তু ওই হিসেবে পর্যটক নেই। ভারতের ভ্রমণ ভিসা চালু হওয়ার কারণে অনেক পর্যটক সেখানে যাচ্ছেন। আবার করোনা পুরোপুরি চলে না যাওয়ায় বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনাও কম।

সিলেট হোটেল-মোটেল রেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমাত নুরী বলেন, সিলেট শহরকেন্দ্রিক হোটেল-মোটেলগুলোর অবস্থা ভালো। ঈদের ছুটিতে পর্যটকেরা সিলেট ঘুরে দেখার জন্য অগ্রিম বুকিং করে রাখছেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় এবার হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা গত দুই বছরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠবেন বলে আশা করছেন তিনি।