সীমানাপ্রাচীর ভেঙে সড়কের জন্য জায়গা দিলেন এলাকাবাসী

মৌলভীবাজার জেলার মানচিত্র

ছোট একটা গলিপথ। দুইপাশে অনেকগুলো বাসাবাড়ি। নতুন নতুন বাসা উঠছে। পথটি দিয়ে রিকশাও স্বচ্ছন্দে চলতে পারে না। অনেকের আশঙ্কা ছিল দুর্যোগে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ঢুকবে না। যে কেউ যেকোনো মুহূর্তে বিপদে পড়তে পারেন। সেই আশঙ্কার পরিণতি বাস্তবে দেখলেন এলাকার মানুষ। বছর দুই আগে ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ঢুকতে না পারায় একটি বাসার দোতলার সবকিছু সবার চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

মৌলভীবাজার শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ফাটাবিল এলাকার টিবি হাসপাতাল সড়কের লিংক রোড এটি। টিবি হাসপাতাল সড়ক থেকে ফাটাবিল এলাকার উত্তর প্রান্তে এসে সড়কটি মিলেছে। অগ্নিকাণ্ডের পর প্রায় দুই বছর ধরে সড়ক বড় করার চেষ্টা-তদবির এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। যাঁদের জায়গা ছাড়তে আপত্তি ছিল, তাঁরাও আর বাধা হয়ে থাকেননি। প্রায় ৩০টি বাড়ির মালিক স্বেচ্ছায় সীমানাপ্রাচীর ভাঙাসহ খালি জায়গা ছেড়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে পৌরসভার উদ্যোগে এক্সকেভেটর ও শ্রমিক দিয়ে সীমানাপ্রাচীর ভেঙে সড়ক প্রশস্ত করার কাজ শুরু হয়েছে।

আজ শুক্রবার (২০ মে) সকালে টিবি হাসপাতাল সড়কের লিংক রোড এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অনেকগুলো বাসাবাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভেঙে ফেলা ইট-পাথর পড়ে আছে। এই গলিপথটি বিভিন্ন স্থানে সাত থেকে ১০ ফুটের মতো প্রশস্ত ছিল। এখন প্রায় ৭০০ মিটার এলাকাজুড়ে সড়কটি ১৪ ফুট প্রশস্ত হচ্ছে।

এই এলাকার বাসিন্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কবি পূর্ণা ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স আনা-নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। আগুন লাগলে এই গলি দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকানো যায় না। সেই আশঙ্কা, দুর্ভোগ এখন লাঘব হবে। যাঁরা নিজ দেয়াল ভেঙে জনহিতকর কাজ করে সম্মানের আসন অলংকৃত করেছেন। মহানুভবতা দেখিয়েছেন। রাস্তা প্রশস্ত করতে ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাঁদের সবার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা।’

পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাস্তা বড় করার জন্য দুই বছর ধরে আমরা আলাপ-আলোচনা করে আসছি। জায়গা ছাড়তে বেশিরভাগ মালিক সম্মতিও দিয়েছেন। দুএকজনের আপত্তি থাকায় কাজ হয়নি। একটি বাসায় আগুন লাগার পর আর কেউ বাধা দেননি। সারাদিন এক্সকাভেটর ও শ্রমিক দিয়ে দেয়াল ভাঙা হয়েছে। ৭০০ মিটার দীর্ঘ রাস্তাটি ১৪ ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে। দুই মাসের মধ্যে আশা করছি কাজ শেষ হয়ে যাবে।’