সীমান্ত থেকে আকবরের মালামাল উদ্ধার, ছিল ২০ টাকার একটি নোটও

আকবর হোসেন ভূঞা
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি বরখাস্ত হওয়া উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঞার ব্যবহৃত কিছু মালামাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে দুটো মুঠোফোন, তিনটি সিম কার্ড, কিছু কাপড়চোপড় ও ২০ টাকার একটি নোট রয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্ত এলাকার একটি পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করা হয়। কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দোহা ও জকিগঞ্জ থানার ওসি আবদুন নাসের এতে নেতৃত্ব দেন। একই স্থান থেকে ৯ নভেম্বর আকবরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময়ও ওই দুই ওসি উপস্থিত ছিলেন।

একটি সূত্র জানায়, আকবর পালিয়ে ভারতের যে এলাকায় ছিলেন, সেখান থেকে লোক মারফত জিনিসপত্রগুলো ডোনা সীমান্তের পাহাড়ে রেখে যাওয়া হয়। এরপর পুলিশ গিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, গত ১০ অক্টোবর সিলেট নগরের আখালিয়া এলাকার রায়হান আহমদকে (৩৪) বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরদিন তিনি মারা যান। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার কোতোয়ালি থানায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে নির্যাতনের সত্যতা পায়।

১২ অক্টোবর ওই ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা (ইনচার্জ) এসআই আকবরসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর আকবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যান। ২৭ দিন পর তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে আকবরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রিমান্ড শেষে গত মঙ্গলবার আকবরকে কারাগারে পাঠানো হয়।

কানাইঘাট থানার ওসি শামসুদ্দোহা বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, রিমান্ডে আকবরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডোনা সীমান্ত এলাকার প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে দুটো মুঠোফোন, তিনটি সিম কার্ড, কিছু কাপড়চোপড় ও ২০ টাকার একটি নোট উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো মামলার আলামত হিসেবে তদন্তকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হবে।

রিমান্ডে আকবরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডোনা সীমান্ত এলাকার প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। উদ্ধার জিনিসগুলো মামলার আলামত হিসেবে তদন্তকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হবে।
শামসুদ্দোহা, ওসি, কানাইঘাট থানা

তবে একটি সূত্র জানায়, আকবর পালিয়ে ভারতের যে এলাকায় অবস্থান করছিলেন, সেখান থেকে লোক মারফত জিনিসপত্রগুলো ডোনা সীমান্তের পাহাড়ে রেখে যাওয়া হয়। এরপর পুলিশ গিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে। মুঠোফোনের তথ্য থেকে আকবরকে পালাতে সহায়তাকারী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতেই এগুলো উদ্ধার করা হয়।

ওই সূত্রে আরও জানা যায়, আকবর ১৪ অক্টোবর কোম্পানীগঞ্জের উৎমা সীমান্ত এলাকা দিয়ে পালিয়ে ভারতে যান। সেখানে তিনি কুমার দেব নাম ধারণ করেন। তিনি শিলচর এলাকায় গোপাল নামের এক ব্যক্তির ভাই পরিচয় দিয়ে খাসিয়া সেজে বাস করছিলেন। তিনি সেখানে খাসি ও হিন্দি ভাষায় কথা বলতেন। গোপন সূত্রের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত হয়ে ভারতীয় খাসিয়া ও সীমান্ত এলাকার লোকজনের সহায়তায় ডোনা এলাকায় এনে আকবরকে গ্রেপ্তার করে সিলেট জেলা পুলিশের একটি দল।