সুন্দরবনসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে আবার মানুষের ঢল
সাতক্ষীরায় জাতি-ধর্মনির্বিশেষে ঈদ আনন্দে মেতেছে নানা বয়সী মানুষ। ঈদ উদ্যাপনের অনুষঙ্গ হিসেবে সুন্দরবনের কলাগাছি, দোবেঁকি পর্যটনকেন্দ্র ও আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে।
জেলা শহরের বাইপাস সড়ক, ডিসি পার্ক, লেকভিউ রিসোর্ট, মোজ্জাফর গার্ডেন ও রিসোর্টে যেন তিল ঠাঁই নেই। দেবহাটা উপজেলার রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটনকেন্দ্রে ও বনবিবির বটতলাও মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
‘সাতক্ষীরার আকর্ষণ সড়কপথে সুন্দরবন’ স্লোগানে সুন্দরবনসংলগ্ন আকাশলীনা, কলাগাছি ও দোঁবেকি পর্যটনকেন্দ্রে সাজানো হয়েছে। পরিপাটি পরিবেশে পর্যটকেরা ঘুরে ঘুরে প্রকৃতির নান্দনিক দৃশ্য উপভোগ করছেন।
ঢাকা থেকে ঈদ উপলক্ষে সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়ায় এক স্বজনের বাড়িতে এসেছেন চাকরিজীবী শরিফুল হাসান। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবনের কলাগাছিতে ভ্রমণে এসেছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে বিকেল সাড়ে চারটায় কথা হয়। শরিফুল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবন ভ্রমণে আসার ইচ্ছা। সুযোগ জুটে গেল, তাই আর হাতছাড়া করলাম না। সুন্দরবন ভ্রমণ শেষে আকাশলীনাতে গিয়েছিলাম। সুন্দরবন অপূর্ব, না আসলে বুঝতেই পারতাম না, কেন এই বনের নাম সুন্দরবন হয়েছে।’
আকাশলীনার সামনে বেলা ১১টার দিকে আলাপ হয় খুলনা থেকে আসা মাহবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকালে আকাশলীনায় ঘুরে তাঁরা যাচ্ছেন সুন্দরবনের ভেতরে কলাগাছিতে। আকাশলীনা দেখে তাঁরা মুগ্ধ। মাছের মিউজিয়াম, সারি সারি সুন্দরবনের গাছগাছালি, কাঠের সাঁকোর ওপর দিয়ে ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়ানো। নদীর পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকা। সে এক অন্য রকম চমক।
সাতক্ষীরা শহর থেকে আম্বিয়া ও আনোয়ারা এসেছেন সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কে ঘুরতে। তাঁরা জানালেন, এসে বিড়ম্বনায় পড়ছেন। এত মানুষের ভিড়ে তাঁরা ঘুরতে পারেননি। আবার যানজটের কারণে ফিরে অন্য জায়গাও যেতে পারেননি।
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা নূর আলম বলেন, এবার সুন্দরবন ভ্রমণে মানুষের সমাগম ছিল নজিরবিহীন। বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন ও মুন্সিগঞ্জ বন ফাঁড়ি থেকে বুধবার বেলা তিনটা পর্যন্ত শতাধিক ট্রলার অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে ঢুকেছে। এর আগে এক দিনে এতসংখ্যক ট্রলার পর্যটকদের নিয়ে ঘুরতে নিয়ে যায়নি।
আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র পরিচালনা করে শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ঈদের দিন ৪ হাজার ৪৪১টি টিকিট বিক্রি হয়েছিল। আর আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন দ্বিগুণ টিকিট বিক্রি হওয়ার কথা। দীর্ঘদিন পরে ঘরবন্দী মানুষ যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন। তা ছাড়া অপেক্ষাকৃত আবহাওয়া ভালো থাকায় মানুষ আকাশলীনা ও সুন্দরবন ভালোভাবে উপভোগ করছে।