সেতু আছে, সড়ক নেই

ছড়ার ওপর সেতু নির্মাণ হলেও দুই পাশের সড়ক এখনো নির্মাণ হয়নি। সম্প্রতি খাগড়াছড়ির দীঘিনালার হাচিনসনপুর এলাকায়
পলাশ বড়ুয়া

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার হাচিনসনপুর এলাকায় কবরস্থানের পাশে ছড়ার ওপর নির্মিত সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নেই। এই সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছিল ৩০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। সড়ক না থাকায় কৃষকদের ধানসহ বিভিন্ন ফসল নিয়ে দুই কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হয়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিন নম্বর কবাখালী ইউনিয়নের তারাবনীয়া বিলে মুসলিম পাড়া, উত্তর হাচিনসনপুর ও দক্ষিণ হাচিনসপুর এলাকার দুই শতাধিক কৃষক ধান চাষ করেন। ২০১৫ সালে জমি চাষের জন্য ট্রাক্টর নিয়ে ছড়া পার হওয়ার সময় ট্রাক্টর উল্টে মো. ইসরাফিল (১৯) নামের এক কৃষক মারা যান। পরে কৃষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছড়ার ওপর ৩৩ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। তবে দুই পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ছড়ার ওপর সেতু থাকলেও সেতুটির দুই পাশে কোনো সংযোগ সড়ক নেই। চাষিরা জমির আল দিয়ে চলাফেরা করছেন। সেতু দিয়ে ছড়া পার হওয়ার সময় কথা হয় কৃষক মো. হজরত আলী সঙ্গে। তিনি বলেন, সেতুটি দিয়ে ছড়া পার হওয়ার উপকার পাওয়া যাচ্ছে। তবে সড়ক না থাকায় ধান নিয়ে দুই কিলোমিটার পথ ঘুরে বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে হয়।

কৃষক মো. আবদুল হান্নান বলেন, ‘তারাবনীয়া বিলে আমি ১২ একর জমিতে ধান চাষ করেছি। জমিতে যাওয়ার সময় ছড়া পার হয়ে আল দিয়ে যেতে পারি। কিন্তু ধান কেটে আনতে হলে দুই কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। অধিকাংশ কৃষক রাস্তা না থাকায় আমার বাড়ির উঠান দিয়েই চলাচল করেন। সেতুর দুই পাশে সড়ক নির্মাণ হলে অনেক উপকার হবে।’

তিন কবাখালী ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ সামশু বলেন, তারাবনীয়া বিলে তিন ওয়ার্ডের দুই শতাধিক কৃষক ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করেন। ছড়ার ওপর সেতুটি নির্মাণ করায় কৃষকদের ছড়া পারাপারে উপকার হয়েছে। কিন্তু সেতুর দুই পাশে সড়ক না থাকায় কৃষকদের দুর্ভোগ রয়েই গেছে। সড়ক নির্মাণ হলে কৃষকদের দুই কিলোমিটার পথ আর পেরোতে হবে না।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কাশেম বলেন, কৃষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৩০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর দুই পাশে অবশ্যই সড়ক নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে জমির মালিকদের সদিচ্ছা প্রয়োজন। তাঁদেরও জমির কিছুটা ছেড়ে দিতে হবে।