সেফ হোম থেকে পলায়ন: আনসার সদস্যদের অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি

ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা এলাকার সেফ হোম। এখান থেকেই আজ শুক্রবার ভোরে গ্রিল ভেঙে সীমানাপ্রাচীর টপকে পালিয়েছেন চার তরুণী ও তিন কিশোরী
প্রথম আলো

ফরিদপুর সেফ হোম থেকে গত শুক্রবার রাতে সাত নিবাসী কিশোরী-তরুণী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ওই সময় কর্তব্যরত দুই আনসার সদস্যের দায়িত্বে অবহেলা পাওয়া গেছে। পাশাপাশি সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে ১৪টি সুপারিশ করা হয়েছে। বদলি করা হয়েছে অধিদপ্তরের চার কর্মচারীকে। সাত নিবাসী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তদন্তে বলা হয়েছে, ওই রাতে সেফ হোমের ভেতরে কর্মরত দুই আনসার সদস্য সালমা বেগম (২৬) ও বিউটি আক্তার (২৭) ঘুমিয়ে ছিলেন। প্রতি দুই ঘণ্টা পর নিবাসীদের কক্ষে গিয়ে নজরদারি করার কথা থাকলেও তাঁরা তা করেননি। ঘুমিয়ে থেকে এবং নজরদারি না করে তাঁরা প্রকারান্তরে পালিয়ে যাওয়ার এ ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আনসার ও ভিডিপির কর্মকর্তার কাছে অনুরোধ করেছে তদন্ত কমিটি।

গত শনিবার জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সহকারী উপপরিচালক আবু সাইদুর রহমানকে ওই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। তদন্তকাজ শেষ করে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কাছে কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

তদন্তে বলা হয়েছে, ওই রাতে সেফ হোমের ভেতরে কর্মরত দুই আনসার সদস্য সালমা বেগম (২৬) ও বিউটি আক্তার (২৭) ঘুমিয়ে ছিলেন।
তদন্তে বলা হয়েছে, ওই রাতে সেফ হোমের ভেতরে কর্মরত দুই আনসার সদস্য সালমা বেগম (২৬) ও বিউটি আক্তার (২৭) ঘুমিয়ে ছিলেন।

ওই প্রতিবেদনে আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার পাশাপাশি ১৪ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। এ সুপারিশের মধ্যে রয়েছে সীমানাপ্রাচীর ১৮ ফুট উঁচু করা, নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীর পদ সৃষ্টি করা, প্রতি দুই ঘণ্টা পর দায়িত্ব পালন করার মতো জনবল সৃষ্টি করা, আনসার ও পুলিশ সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি করা, সেফ হোমের চারপাশে গার্ড হাউস স্থাপন করা, সীমানাপ্রাচীরের বাইরে দিয়ে পুলিশের যাতায়াতের উপযোগী সড়ক নির্মাণ, সীমানাপ্রাচীর–সংলগ্ন ও আশপাশের গাছ কেটে ফেলা প্রভৃতি।

এদিকে ওই সেফ হোমের চার কর্মচারীকে ঘটনার পর বদলি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন নার্স, একজন নাইটগার্ড, একজন গার্ড এবং একজন বাবুর্চি রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ এস এম আলী আহসান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন সমাজসেবা অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্টের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

উপপরিচালক আরও বলেন, পালিয়ে যাওয়া ওই সাত তরুণীর মধ্যে এ পর্যন্ত দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি পাঁচজনের উদ্ধারের জন্য পুলিশের পাশাপাশি তাঁদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট মো. সেলিমুজ্জামান বলেন, সেফ হোমের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানেন। তবে ওই কমিটির কোনো সুপারিশ আজ বুধবার পর্যন্ত তিনি হাতে পাননি।