সৈয়দপুরে ভুট্টার বাম্পার ফলন, ভালো দামে কৃষকের স্বস্তি

নীলফামারীর সৈয়দপুরে রোদে শুকানো হচ্ছে মাড়াই করা ভুট্টা। কামারপুকুর এলাকায়
ছবি : প্রথম আলো

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় সর্বত্র ভুট্টা কাটা, মাড়াই ও বিক্রির কর্মযজ্ঞ চলছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। গত বছরের তুলনায় এবার ভুট্টার দ্বিগুণ দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ছয় থেকে সাত হাজার টাকা। ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ মণ। গত বছর প্রতি মণ ভুট্টার দাম যেখানে ছিল ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, সেখানে চলতি বছর তা হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা এই দামে মাঠ থেকেই কাঁচা ভুট্টা কিনছেন। এতে কৃষকেরা প্রতি বিঘায় খরচ বাদে আয় করছেন ২২ থেকে ২৮ হাজার টাকা। এ ছাড়া মাড়াই যন্ত্রের মালিকেরা ভুট্টা মাড়াই করে দিতে বিঘাপ্রতি নিচ্ছেন ৬০০ টাকা। তাঁরা এক দিনে ১৫ থেকে ১৮ বিঘার ফসল মাড়াই করে ৯ থেকে ১১ হাজার টাকা আয় করছেন।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, দেশে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ ও গবাদিপশু পালন বেড়েছে। এতে খাবার তৈরিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পড়ছে ভুট্টার। তাই শস্যটির চাহিদাও থাকছে বছরজুড়ে। ভালো দাম পাওয়ায় প্রতিবছর কৃষকেরা ঝুঁকছেন ভুট্টা চাষে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা ভুট্টা তোলামাত্র কোনো ঝামেলা ছাড়াই বাড়িতে নগদ মূল্যে বিক্রি করছেন। বাঙালিপুরের ভুট্টাচাষি সরাফত হোসেন জানান, গত বছর যে ভুট্টা মণপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, এ বছর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়। পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে তাঁর খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। ফলন পেয়েছেন ১৩৫ মণ। যাতে খরচ বাদে লাখ টাকার অধিক আয় করেছেন।

কামারপুকুরের কৃষক আহসানুল হক বলেন, যৎসামান্য খরচে উৎপাদিত ভুট্টা কৃষক, ব্যবসায়ী, বর্গাচাষি পরিবারের আর্থসামাজিক অবস্থা পাল্টে দিয়েছে। একসময় যে জমিগুলো অনাবাদি পড়ে থাকত, এখন সেই জমিতে ভুট্টার পর আউশ, আমন চাষ চলছে। এরপর আগাম আলু চাষ করা যাবে যথাসময়ে।

বোতলাগাড়ির কৃষক আবদুল কাদের বলেন, অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টার খরচ তুলনামূলক কম। এ বছর দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা সুবিধা পাচ্ছেন। তিনি দুই বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। ভবিষ্যতে জমির পরিমাণ বাড়াবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা বেগম বলেন, কৃষি অফিসের সার্বিক পরামর্শে কৃষকেরা যথাসময়ে কৃষি প্রণোদনার সার, বীজ পেয়ে ভুট্টার চাষাবাদ করেছেন। তাঁরা দ্বিগুণ দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন।