স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পেতে সালিসে বিষপান
টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পেতে বিষপাণ করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন এক নারী (২৪)। আজ বুধবার উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় স্বামীর সঙ্গে বিরোধ মীমাংসার জন্য সালিস বৈঠক চলাকালে তিনি বিষপান করেন।
ওই নারীর নাম সুলতানা খাতুন। তিনি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা সদরের আজগর আলীর মেয়ে। তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দাড়িয়াপুর ফাইলা পাগলার মাজার এলাকার আবদুর রহিম ও সুলতানা খাতুন গাজীপুর চৌরাস্তায় একটি এনজিওতে চাকরি করতেন। ওই সময় তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট রহিম সুলতানাকে বিয়ে করেন। গাজীপুর শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে তাঁরা সংসার শুরু করেন। কিছুদিন আগে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে আবদুর রহিম সখীপুরের নিজ বাড়িতে চলে আসেন। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনের নম্বরও পরিবর্তন করেন।
স্থানীয় সূত্র আরও জানায়, পরে সুলতানা নানাভাবে আবদুর রহিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি তাঁকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এ কারণে গত ৩১ জুলাই স্ত্রীর অধিকার আদায়ের জন্য কাবিননামা ও বিষের বোতল হাতে নিয়ে স্বামী আবদুর রহিমের বাড়িতে অবস্থান নেন সুলতানা। এ সময় আবদুর রহিম ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান। সুলতানা স্ত্রীর মর্যাদার দাবি আদায়ের জন্য স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নিয়ে অনশন করতে থাকেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য আজ বুধবার সখীপুরের দাড়িয়াপুর আবাদি বাজার এলাকায় দুই পক্ষের লোকজন নিয়ে সালিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আসিফ, সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল শামীম, ইউপি সদস্য শাহীন মিয়া এবং ভূঞাপুর উপজেলার সন্দুলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, সুলতানার বড় ভাই শামীমসহ উভয় পক্ষের শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সালিস বৈঠকে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে উভয় পক্ষের সম্মতিতে আবদুর রহিম ও সুলতানা খাতুনের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে সুলতানা হঠাৎ বোতল বের করে নিজের মুখে বিষ ঢেলে দেন।
এ বিষয়ে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার আসিফ প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েটি এমন কাণ্ড ঘটাবে তা আমরা বুঝতে পারিনি। মেয়েটি সুস্থ হলে আবার এ বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে সাইদুল হক ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেননি।’