স্পেনে প্রদর্শিত হচ্ছে রোহিঙ্গা নিপীড়নের তথ্যচিত্র ‘তাহলে আমি কোথায় যাব’
কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অমানবিক জীবন, তাদের ওপর চালানো সহিংসতা ও নিপীড়ন নিয়ে তৈরি করা হয়েছে তথ্যচিত্র ‘হোয়ার উইল আই গো’ (তাহলে আমি কোথায় যাব)।
এই তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে স্পেনের বার্সেলোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলারসের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে। ১৯ জুলাই শুরু হওয়া আয়োজন চলবে ২৩ জুলাই পর্যন্ত।
আইনগতভাবে রোহিঙ্গা নির্যাতনকে গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়া, অভিযুক্তদের বিচারসহ চারটি বিষয় সাধারণ মানুষ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছানো এই তথ্যচিত্র তৈরির মূল উদ্দেশ্য। এটির পরিচালক ও প্রযোজক মো. খালিদ রহমান। তিনি ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশের শিক্ষক, আইনজীবী, গবেষক ও ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার। নির্বাহী প্রযোজক এস এম ফয়সাল আবরার ও ফাহিম কুদ্দুস প্রিয়। চিত্রগ্রাহক ফাহিম কুদ্দুস প্রিয়, আশফাকুর আলম ও মো. খালিদ রহমান। ভিডিও সম্পাদনা করেছেন তাহসিন মাহমুদ। তাঁরা সবাই আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রাখাইনে সেই দেশের সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো হয় জাতিগত সহিংসতা। আট লাখের বেশি রোহিঙ্গা তখন জন্মভূমি ছেড়ে পালিয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। এর আগে পালিয়ে আসে আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ। আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক ও আইনগত জটিলতায় রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে পারছেন না।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা নিপীড়নের এই তথ্যচিত্র প্রচারের খবরে খুশি উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরের শরণার্থীরা। কুতুপালং শিবিরের রোহিঙ্গানেতা জালাল আহমদ বলেন, এই তথ্যচিত্র রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধারে বিশ্বজনমত গঠনে বড় ভূমিকা পালন করবে।
প্রযোজক মো. খালিদ রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দফায় তাঁর দল রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়ে বিভিন্ন বয়সীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এসব সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা জনগণের ওপর অত্যাচার, বৈষম্য এবং মিয়ানমারে সংঘটিত ব্যাপক সহিংসতা ও নৃশংসতার বিবরণ ওঠে এসেছে। সহিংসতার মধ্যে আছে যৌন সহিংসতাও। এ ছাড়া গণহত্যা, জাতিগত সহিংসতা, বলপূর্বক অন্তর্ধান, সম্পত্তি ধ্বংস ও নির্যাতনের তথ্যও রোহিঙ্গাদের বয়ানে ওঠে এসেছে।