স্বামীর সঙ্গে অন্য ব্যক্তির ‘ধ্বস্তাধস্তি থামাতে গিয়ে’ স্ত্রীর মৃত্যু

লাশ
প্রতীকী ছবি

বরিশাল শহরে বাড়ি নির্মাণের কাজ নিয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে স্বামীর ‘ধস্তাধস্তি থামাতে গিয়ে’ এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফিশারি রোড ‍এলাকায় দুই পক্ষের হাতাহাতির সময় ওই নারী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে সন্ধ্যায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। আতিয়া খানম ওরফে কণা (৪০) নামের ওই গৃহবধূ একই ‍এলাকার বাসিন্দা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মো. গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী।

গিয়াস উদ্দিনের অভিযোগ, মাথায় ইটের আঘাতে আহত হয়ে তাঁর স্ত্রী মারা গেছেন। তবে চিকিৎসক জানিয়েছেন, ওই নারীর মাথায় কোনো আঘাতের চিহ্ন দৃশ্যমান ছিল না। তবে মস্তিষ্কের ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়ে তাঁর মৃত্যু হতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।

গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফিশারি রোড ‍‍এলাকায় ‍তাঁর ‍একটি জমি আছে। সেখানে বাড়ি করতে গিয়ে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেনের দুই ভাই হুমায়ুন কবির ও তৌহিদুল ‍ইসলাম ওরফে মুন্নার সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়। সুসম্পর্কের কারণে তিনি বাড়ি নির্মাণের যাবতীয় কাজে তাঁদের সহযোগিতা চান। সে অনুযায়ী কাজও চলছিল। কিন্তু গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে হঠাৎ করে তৌহিদুল ‍ইসলাম তাঁকে (সেনাসদস্য) ‍‍নানা বিষয় নিয়ে বকাঝকা শুরু করলে তাঁদের দুজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। ‍একপর্যায়ে তৌহিদুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে ‍তাঁর স্ত্রী আতিয়া খানমকে ‍লক্ষ্য করে ‍একটি ‍ইট নিক্ষেপ করেন। এতে তাঁর স্ত্রীর মাথায় আঘাত লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে গুরুতর ‍আহত অবস্থায় ‍তাঁকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ‍তিনি হত্যা মামলা করবেন বলে জানান।

অভিযোগের বিষয়ে তৌহিদুল ‍ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জগলুল মোর্শেদ বলেন, গিয়াস উদ্দিন ও তৌহিদুলের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতির সময় গিয়াসের স্ত্রী আতিয়া খানম তা থামাতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার পর আতিয়া খানম মারা যান।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন–২ ইউনিটের সহকারী রেজিস্ট্রার শুভ ওঝা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের ধারণা, আতিয়া খানম মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের কারণে মারা গেছেন। এ ছাড়া তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ছিল।’

বরিশাল নগর পুলিশের বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে যা পেয়েছি, তাতে এটি হত্যা নাকি অসুস্থতাজনিত মৃত্যু, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। লাশ এখনো হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এবং লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’