স্বাস্থ্যকর্মী সেজে নিবন্ধন, টিকাও নিচ্ছেন

ফাইল ছবি: রয়টার্স

নুরুল ইসলাম (ছদ্মনাম) পেশায় ব্যবসায়ী। ৩৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি করোনার টিকা নিয়েছেন। এমনকি পরিবারের সদস্য, যাঁদের বয়স ৪০ বছর পূর্ণ হয়নি, তাঁরাও টিকা নিয়েছেন। সূক্ষ্ম একটি পন্থায় তিনি নিবন্ধন করেন এবং টিকা নেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, নিবন্ধন করতে সুরক্ষা ওয়েবসাইটে গিয়ে পরিচয় যাচাই ধরন নির্বাচনে অনুমোদিত বেসরকারি ও প্রাইভেট স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-কর্মচারী শ্রেণি নির্ধারণ করা হচ্ছে। সেখানে যাওয়ার পর উপশ্রেণিতে স্বাস্থ্যকর্মী বা নার্স নির্ধারণ করে নিবন্ধন করা হচ্ছে।

এভাবে টিকা নেওয়ার বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, সুরক্ষা ওয়েবসাইটে যদি নিবন্ধন গ্রহণ করে, তাহলে সমস্যা কোথায়। নিবন্ধন হয়েছে, তাই তিনি টিকা নিয়েছেন।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চিকিৎসক বলেন, স্বাস্থ্যকর্মী বা নার্স শনাক্তের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এমন সমস্যা হচ্ছে। এটা ঠিক করা প্রয়োজন। নিবন্ধন কার্ডে পেশা লেখা থাকে না। আবার টিকা দেওয়ার সময় যাচাইও করা হয় না।

এদিকে টিকায় অগ্রাধিকার পাওয়ার পেশার কেউ কেউ নিবন্ধন করতে পারছেন না। কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, জেলায় মাঠে কাজ করা বেশির ভাগ গণমাধ্যমকর্মীর বয়স ৪০–এর নিচে। এ রকম যাঁরা আছেন, তাঁরা নাম পাঠিয়েও নিবন্ধন করতে পারছেন না। বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ের দেখা উচিত। তিনি বলেন, অনেকে ৪০ বছরের কম বয়সী হয়েও কৌশল খাটিয়ে ভিন্ন পথে নিবন্ধন করে টিকা নিচ্ছেন।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যকর্মী বা নার্স সেজে নিবন্ধনের বিষয়টি জানা নেই।

সারা দেশে প্রায় এক হাজার কেন্দ্রে টিকাদান চলছে। গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮০ জন টিকা নিয়েছেন। গতকাল বেলা আড়াইটা পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ১৪ লাখ ৯২ হাজার ৩৪৫ জন।

স্বাস্থ্যকর্মী সেজে টিকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের পরিচালক মিজানুর রহমান গতকাল শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে নিবন্ধনের বিষয়ে আমরাও কয়েকজনের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমরা তথ্য ও প্রযুক্তি যোগাযোগ বিভাগকে জানিয়েছি।’