স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি না হলে বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমবে না: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

যশোরে গণস্বাস্থ্য লেবুতলা হাসপাতালের জায়গা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আজ সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি না হলে বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আজ রোববার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামে ‘গণস্বাস্থ্য লেবুতলা হাসপাতালের’ জন্য নির্ধারিত জায়গা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্যের অন্যতম কারণ স্বাস্থ্যব্যবস্থার নাজুক পরিস্থিতি। এখানে ওষুধের দাম বৃদ্ধি ও চিকিৎসকের অবহেলায় মানুষ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি না হলে বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমবে না।’ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য নিয়ে গণস্বাস্থ্য ব্যবসা করে না বলেই আমরা কম টাকায় সেবা দিতে পারছি। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা করা যাবে না, যেমন ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করা যায় না। দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ খুবই অভাব-অনটনের মধ্যে আছে।’

ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকেন। সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, গত ১৩ বছরে নিজের দলের নেতা-কর্মীরাও তাঁর কাছে পৌঁছাতে পারেননি। সে কারণে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের আওয়াজ তুলতে হবে। প্রত্যন্ত প্রদেশ হলেও মানুষ তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে পারতেন।’

বাজেটের বিষয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বাজেটের আকার বড় হবে, এটাই স্বাভাবিক। শুধু অপচয় কমাতে হবে। নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর খুব কম দেশেই ইভিএমে ভোট হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইভিএম পদ্ধতি জনগণের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। সাধারণ মানুষের ধারণা, তাঁরা যে প্রতীকে ভোট দেন না কেন, তা নির্দিষ্ট একটি প্রতীকে গণনা হয়। আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দলের উপস্থিতি ছাড়া নির্বাচন করা সঠিক হবে না।’

এ সময় নারীপক্ষের সদস্য শিরিন হক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী মনজুর কাদের, লেবুতলা গ্রামের জমিদাতা মৃত শুভাংশু শেখর খাঁর স্ত্রী কল্পনা রানী খাঁ এবং মৃত অরুণ কুমার খাঁর স্ত্রী অরুণা রানী খাঁ, ওই গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শুভাংশু শেখর খাঁ ও তাঁর ভাই অরুণ খাঁর পক্ষে তাঁদের স্ত্রীরা টিনশেড ঘরসহ ৫৫ শতক জমি হাসপাতালের অনুকূলে আজ রেজিস্ট্রি করে দেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষে ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী জমির দলিল গ্রহণ করেন। আগামী জুলাই মাসে লেবুতলায় হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু হবে। সামনের বছরের জুন মাস নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর বিকেলে বাঘারপাড়া উপজেলার কয়েলখালী গ্রামে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আরেকটি হাসপাতালের নতুন জায়গা পরিদর্শনে যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী।