হাজত থেকে বের হওয়ার পরদিন বন্ধুকে খুন

নিহত রাকিব হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

অন্তত ১০টি মামলার আসামি রাসেল হোসেন (২৫)। মারামারির মামলায় তিন মাস হাজতবাস শেষে গতকাল মঙ্গলবার মুক্তি পান। কারামুক্ত হওয়ার পরদিনই আবার জঘন্য অপরাধে জড়ালেন তিনি। এবার হত্যা করলেন বন্ধুকে। নাটোর রেলস্টেশনের পদচারী–সেতুর ওপর আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাকিব হোসেন (২৪) শহরের চকবৈদ্যনাথ এলাকার জালাল হোসেনের ছেলে। রাসেল হাজতে থাকা অবস্থায় তাঁর স্ত্রীকে রাকিব বিয়ে করেছেন। এর জেরেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা পুলিশের।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নাটোর সদর থানা সূত্রে জানা যায়, শহরের একই এলাকার রাকিব ও রাসেল বন্ধু ছিলেন। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মের পদচারী-সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় রাসেলের ধারালো ছুরির আঘাতে রাকিব গুরুতর জখম হন। উপস্থিত লোকজন তাঁকে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ দেখতে পাই, দুজন যুবক পদচারী-সেতুর ওপর তর্ক করছেন। একপর্যায়ে একজন আরেকজনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে আশপাশের লোকজন আহত ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান।’

নাটোর সদর থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাসেলের বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মারামারির মামলায় তিনি তিন মাস ধরে কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাকালে তাঁর বন্ধু রাকিবের সঙ্গে রাসেলের স্ত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন আগে রাসেলকে তালাক দেন তাঁর স্ত্রী। তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে। রাসেলকে ছেড়ে সম্প্রতি রাকিবকে বিয়ে করেন ওই নারী। রাসেল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কারামুক্তি পেয়ে এ ঘটনা জানার পর আজ দুপুরে রাকিবকে রেলস্টেশন এলাকায় ডেকে নেন। এর কিছু সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।

হত্যাকাণ্ডের পর রাসেলের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে প্রতিবেশীরাও মুখ খুলতে রাজি হননি। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। ঘটনাস্থল রেলওয়ে পুলিশের এখতিয়ারাধীন। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তবে সদর থানার পুলিশ আইনশৃঙ্খলা শান্ত রাখার স্বার্থে ঘটনাস্থলে রয়েছে। রাসেলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।