হাটহাজারীতে সহিংসতার মামলায় এক আসামির জবানবন্দি

গত ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজত কর্মীদের মিছিল থেকে থানায় হামলা করা হয়। তাঁদের ইটপাটকেলের আঘাতে থানার জানালার কাচ ভেঙে যায়
ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার উপজেলা হেফাজতের (বিলুপ্ত কমিটি) এক নেতা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর নাম মাওলানা ইমরান শিকদার। তিনি হাটহাজারী উপজেলা হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম আনজু মান আরা বেগমের আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। এই প্রথম হাটহাজারীর ঘটনায় কোনো হেফাজত নেতা জবানবন্দি দিলেন।

হাটহাজারী উপজেলা ভূমি কার্যালয় এবং সদর ভূমি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় হাটহাজারী থানায় করা দুই মামলা তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চট্টগ্রাম। দুই মামলায় গ্রেপ্তার আসামি ইমরান শিকদারকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে আজ বিকেলে আদালতে হাজির করা হলে তিনি জবানবন্দি দেন।

আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে আসামি বলেন, ঘটনার দিন (২৬ মার্চ) হেফাজতের কোনো পূর্বনিধারিত কর্মসূচি ছিল না। ছাত্ররা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে খবর পেয়ে তিনি ছুটে আসেন। রাস্তায় থাকা ছাত্রদের তিনিসহ মাদ্রাসার শিক্ষকেরা মাদ্রাসার ভেতর নেওয়ার চেষ্টা করেন। সেখানে ছাত্রদের সঙ্গে বিএনপি–জামায়াতের কিছু কর্মী ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে হেফাজতের কিছু নেতা–কর্মীর উশৃঙ্খল আচরণ করতে দেখেন।

সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, আসামির জবানবন্দিতে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মার্চ ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার জেরে ওই দিনই চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও পটিয়ায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে। হাটহাজারীতে পুলিশের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। সে সময় পটিয়া ও হাটহাজারী থানায় হামলা, ভূমি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পৃথক সাতটি মামলা হয়। এসব মামলায় ৪ হাজার ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।

পরে ২২ এপ্রিল হেফাজতের নেতা-কর্মীদের আসামি করে পৃথক তিনটি মামলা করে হাটহাজারী থানা-পুলিশ। এর মধ্যে দুই মামলায় হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীকে আসামি করা হয়। তিন মামলায় আসামি করা হয় তিন হাজার ব্যক্তিকে। এর মধ্যে ১৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।