হাতকড়ায়ও আটকে রাখা গেল না যুবলীগ নেতাকে, তিন পুলিশ প্রত্যাহার

মো. মিরাজ
ছবি: সংগৃহীত

বরগুনায় গতকাল সোমবার মাদকসহ আটকের পর হাতকড়া থেকে হাত বের করে পালিয়ে গেছেন যুবলীগের এক নেতা। এ ঘটনার পর আজ মঙ্গলবার স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির তিনজনকে প্রত্যাহার করেছে জেলা পুলিশ।

যুবলীগের ওই নেতা হলেন মো. মিরাজ। তিনি বরগুনা সদর উপজেলার ১০ নম্বর নলটোনা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। তাঁর বাড়ি ইউনিয়নের গোড়াপদ্মা গ্রামে। প্রত্যাহার হওয়া তিনজন হলেন বাবুগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রণজিৎ কুমার সরকার, উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম ও কনস্টেবল তৌহিদ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, পালিয়ে যাওয়া মিরাজকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাটির বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মহোদয় অবগত আছেন। তাঁর নির্দেশে বাবুগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তিনজনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। মাদক উদ্ধারের ঘটনায় মঙ্গলবার থানায় মামলা হয়েছে। একই ঘটনায় আটক হওয়া কাশেম নামের অপরজনকে ওই মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যার দিকে নলটোনা ইউনিয়নের গোড়াপদ্মা গ্রাম থেকে মিরাজ ও তাঁর সহযোগী কাশেমকে ১০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করেন বাবুগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। পরে তাঁদের ওই পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে হাতকড়া পরিয়ে তাঁদের একটি কক্ষের জানালার গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। কিন্তু পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে একসময় মিরাজ হাতকড়া থেকে হাত বের করে পালিয়ে যান।

আসলে অভিযানে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা মিরাজসহ দুজনকে আটক করেন। তখনই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যান মিরাজ।
মহরম আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বরগুনা

সোমবার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বরগুনা সদর থানার ওসি তারিকুল ইসলামসহ অন্যরা। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা মহরম আলী বলেন, পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে থাকা অবস্থায় হাতকড়া থেকে হাত বের করে মিরাজের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। আসলে অভিযানে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা মিরাজসহ দুজনকে আটক করেন। তখনই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যান মিরাজ।

মিরাজের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেছেন নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, মিরাজ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে এর আগেও তিনি দুইবার মাদকসংশ্লিষ্ট কারণে পুলিশের হাতে আটক হন। বছরখানেক আগে কারাগারেও ছিলেন মিরাজ। ওই সময় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।