হাতবাঁধা জীবন কাটানো শিশু বৃষ্টির চিকিৎসার দায়িত্ব নিল প্রশাসন

বৃষ্টির মা-বার হাতে চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকার অনুদানের চেক তুলে দেন নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান
ছবি: প্রথম আলো

সাত বছর ধরে দুই হাত বেঁধে রাখা সেই শিশু জান্নাতুল বৃষ্টির (৮) চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান তাঁর নিজ কার্যালয়ে শিশুটির মা-বার হাতে চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকার অনুদানের চেক তুলে দেন।

এ সময় দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব উল আহসান, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আলাউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান বলেন, বৃষ্টিকে আগামী শনিবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসক দেখানো হবে। আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন হলে সব ব্যয় জেলা প্রশাসন বহন করবে। দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে শিশুটির চিকিৎসার তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার দশাল গ্রামের রাজমিস্ত্রি শাহজাহান মিয়া ও গৃহিণী আয়েশা খাতুনের মেয়ে জান্নাতুল বৃষ্টি। দুই বোনের মধ্যে সে বড়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে জন্মের সময় বৃষ্টির নড়াচড়ায় কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করানো হয়। এক বছর যেতে না যেতেই শিশুটির অস্বাভাবিক আচরণ বাড়তে থাকে। মুক্ত অবস্থায় সে নিজেই নিজের মাথায় থাবড়াতে থাকে। হাত-পায়ে কামড়াতে থাকে। রাতে না ঘুমিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করে। লোকজনকে মারতে আসে। জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এসব কারণে নিরুপায় হয়ে তাকে সারাক্ষণ ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।

এ নিয়ে গত রোববার প্রথম আলোতে ‘হাতবাঁধা জীবন কাটছে শিশুটির’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

বৃষ্টির বাবা শাহজাহান মিয়া বলেন, তিনি রাজমিস্ত্রি। সামান্য রোজগারে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারেননি।

দুর্গাপুরের ইউএনও রাজীব উল আহসান বলেন, বৃষ্টির চিকিৎসার বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক ওয়াসিম এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। আগামী শনিবার মা-বাবাসহ তাকে সেখানে পাঠানো হবে। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাকে দেখবেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। তাঁরা প্রয়োজন মনে করলে বৃষ্টিকে ঢাকার নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালেও পাঠানো হবে।