হাতিয়ায় নৌকার দুজনসহ চার প্রার্থীর ভোট বর্জন

নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও হাতিয়ার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। আজ সোমবার সকাল আটটা থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতিয়া উপজেলায় নৌকার দুই প্রার্থীসহ চারজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

এর মধ্যে হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী এ টি এম সিরাজ উল্লা, বুড়িরচর ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী জিয়া আলী মোবারক কল্লোল, সোনাদিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল ইসলাম ওরফে মালয়েশিয়া ও চর ঈশ্বর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল হালিম আজাদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো বুড়িরচর ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী জিয়া আলী মোবারক কল্লোল অভিযোগ করেন, ভোট গ্রহণের আগে গতকাল রোববার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলীর সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ফখরুল ইসলামের অনুসারীরা ভোটকেন্দ্রের আশপাশে অবস্থান নেন। এরপর আজ সকালে তাঁরা কেন্দ্রে এজেন্টদের প্রবেশে বাধা দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখলে নেন। এই পরিস্থিতিতে তিনি বাধ্য হয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।

একই অভিযোগ করেছেন সোনাদিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তাঁর ইউনিয়নের ১৩টি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিতে নৌকার প্রার্থীর লোকজন প্রভাব বিস্তারের কারণে তাঁর কোনো এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এ পরিস্থিতিতে তিনি তাঁর ভোটারদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সকাল নয়টায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী। মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, বুড়িরচর ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থীর লোকজন দুই দিন আগে সেখানকার স্বতন্ত্র প্রার্থীর কয়েকজন অনুসারীকে কুপিয়ে আহত করেছেন। ওই ইউনিয়নে নৌকা প্রার্থীর পরাজয় নিশ্চিত জেনে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। একইভাবে সোনাদিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল ইসলামও নৌকার পক্ষে গণজোয়ার দেখে তাঁর নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

এদিকে সকাল পৌনে ১০টায় সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এই কেন্দ্রসহ চরভাটা ইউনিয়নের ১০টি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। ভোট দিতে আসা সবিতা রানী দাস প্রথম আলোকে বলেন, কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই ভোট নেওয়া হচ্ছে। তিনি সুন্দরভাবে তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছেন।

সকাল সোয়া ১০টায় একই উপজেলার চর আমানুল্লাহ ইউনিয়নের জব্বারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পুরুষের তুলনায় নারী ভোটার বেশি। তবে বৃষ্টির কারণে ভোটারদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৬৫৩। সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে ৩০০ ভোট পড়েছে।