রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে অনলাইনে টিকিট বিক্রি প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তন হয়েছে। ২৬ মার্চ থেকে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব নেবে। এ জন্য আজ রোববার থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত যাত্রীদের হাতে লেখা টিকিট দেবে কর্তৃপক্ষ। এ প্রক্রিয়ায় প্রথম দিনই দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন যাত্রীরা। টিকিট নিয়ে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নাজেহাল হয়েছেন টিকিট কিনতে আসা এক ব্যক্তি। এ নিয়ে রেলওয়ে স্টেশনে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, আজ বেলা ১১টার দিকে স্টেশনে যাত্রীরা টিকিটের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সবচেয়ে বড় লাইন দেখা গেছে এসি টিকিটের জন্য। টিকিটপ্রত্যাশীরা অভিযোগ করেন, কাউন্টারে বুকিং সহকারীরা ধীরগতিতে কাজ করছেন। কোনো কোনো বুকিং সহকারী কিছুক্ষণ পরপরই কাউন্টার থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। কাউন্টার ফাঁকা পড়ে থাকছে। ফলে টিকিট পেতে সময় বেশি লাগছে।
লাইনে না দাঁড়িয়েও টিকিট নিয়ে যেতে দেখে স্টেশনে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) এক সদস্যের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন নাজমুল হক নামে টিকিটের জন্য আসা এক যুবক। আরএনবির দাবি, নাজমুল তাদের এক সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) চড় মেরেছেন।
ঘটনার পর আরএনবি সদস্যরা নাজমুলকে লাইন থেকে তাঁদের অফিসে ধরে নিয়ে যান। টানাহেঁচড়ায় তাঁর পরনের গেঞ্জি ছিঁড়ে যায়। তাঁকে রক্ষায় এগিয়ে এলে আরেক যুবককেও ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মুচলেকা আদায়ের পর নাজমুলকে ছাড়া হয়। নাজমুলের দাবি, অনেকে লাইনে না দাঁড়িয়েও টিকিট নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আরএনবির কাছে এ অভিযোগ করেছিলেন। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আরএনবির সদস্য তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। তিনি চড় মারেননি।
মারুফ হোসেন নামের এক যাত্রী স্টেশনের এক নম্বর কাউন্টারের সামনে চার ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর টিকিট পাওয়ার কথা জানান। আবদুর রহমান নামে আরেক যাত্রী অভিযোগ করেন, অনেকে লাইন না ধরেও টিকিট নিচ্ছেন।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলের চিফ কমান্ড্যান্ট আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘যাত্রীরাই আমাদের কাছে বড়। তাদের সেবা দিতে হয়। কিছু কিছু সময় যাত্রীরা অপমানজনক কথা বলেন। আমরা তাঁদের ধরে বোঝাই। নাজমুলকেও বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে তাঁর নাম-ঠিকানা নেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে ডাকলে তাঁকে পাওয়া যায়।’
টিকিট অব্যবস্থাপনার বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, এত দিন কম্পিউটারে টিকিট প্রিন্ট হয়ে বের হয়েছে। এখন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন হচ্ছে। ২৫ মার্চ পর্যন্ত হাতে লেখা টিকিট দিতে হবে। এ কারণে কার্যক্রমে ছন্দপতন হচ্ছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে যাত্রী নাজেহাল হওয়ার কথা শুনে অসীম কুমার তালুকদার বলেন, এটি হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখবেন তিনি। ঘটনা সত্য হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।