হাত হারানো জমশেদের জোটেনি ত্রাণের এক ছটাক চালও

বাম হাত হারানো জমশেদ বন্যাদুর্গত হলেও ত্রাণ হিসেবে কিছু পাননি
ছবি: প্রথম আলো

সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার ত্রাণ দেওয়া হচ্ছিল। ত্রাণ হিসেবে পাঁচ কেজি চাল পাওয়ার আশায় কার্যালয়ের ফটকের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন জমশেদ আলী (৪৫)। দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকেও তিনি ভেতরে ঢুকতে পারেননি। ফটকের সামনে থাকা প্রহরীদের অনুনয়-বিনয়ও করেন ত্রাণ পেতে। কিন্তু তাঁর ভাগ্যে এক ছটাক চালও জোটেনি।

জমশেদ বলেন, ‘১৫ বছর বয়সে গাছ থাকি পড়ি গিয়া বাম হাত ভাঙছি। এই হাত কাটতে হইছে একসময়। এক হাত ছাড়া কুনু কামকাজও করতে পারি না। এরপর থাকি ভিখ (ভিক্ষাবৃত্তি) করি খাই। সিলেট শহরের বন্দরবাজার, আম্বরখানা এলাকায় ভিখ করি। এখন রাস্তাত পানি, শহরেও যাওয়া বন্ধ। ভিখও বন্ধ। খাইয়া না-খাইয়া আছি। আমার নিজের কুনু বাড়িঘরও নাই। যে ঘরও থাকি, ই-খানও পানি উঠি গেছে।’

কথা বলতে বলতে জমশেদ মাঝেমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের দিকে ঘাড় ফিরিয়ে উঁকিঝুঁকিও দেন। কী দেখেন ঘাড় ঘুরিয়ে, প্রশ্ন রাখতেই বলেন, ‘দেখি, চিয়ারম্যান সাব আইয়া ত্রাণ দেয়নি! যদি কুনতা পাই!’

কথায় কথায় জানা গেল জমশেদের বাড়ি সদর উপজেলার আলীনগর গ্রামে। তবে ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে ঘোপাল গ্রামে থাকেন। স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার। টাকার অভাবে সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারছেন না। জমশেদ বলেন, ‘ঘরে চাল-ডাল নাই। একটা ত্রাণের প্যাকেট পাইলে ভালো হইত। তিন ঘণ্টা দাঁড়াইয়া পায়ে ঝিমঝিম করে। আফসোস, এক ছটাক চালও পাইলাম না।’