হামলার ১০ দিন পরও মামলা না নেওয়ার অভিযোগ

সাতক্ষীরা জেলার মানচিত্র

সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন সত্যজিৎ মণ্ডল। এর জেরে তাঁর মাছের ঘেরে লুটপাট এবং স্ত্রী, মেয়েসহ তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

সত্যজিৎ মণ্ডলের অভিযোগ, তাঁদের ওপর হামলা চালানোর পর ১০ দিন হয়ে গেলেও থানা থেকে মামলা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযুক্তরা তাঁদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। সত্যজিতের স্ত্রী ও মেয়ে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি জানিয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ ও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন সত্যজিৎ মণ্ডল। তিনি আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের কাঁকড়াবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

লিখিত বক্তব্যে সত্যজিৎ মণ্ডল উল্লেখ করেন, সম্প্রতি শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাঁর সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হেরে যান। এরপর প্রতিপক্ষ একটি দল তাঁর বাড়ি ভাঙচুর ও মাছের ঘেরে লুটপাট চালায় এবং তাঁকে জীবননাশের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে এক ফেব্রুয়ারি তিনি শ্রীউলা গ্রামের ইসরাফিল মোল্যা, জহরুল ইসলামসহ চারজনের নামে আশাশুনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর জহরুল ও ইসরাফিলের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টার দিকে তাঁর মাছের ঘেরে লুটপাট চালান। খবর পেয়ে তিনি, স্ত্রী মহামায়া মণ্ডল ও মেয়ে রুপা মণ্ডল গিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁদের মারধর করে মারাত্মক জখম করা হয়। চিৎকার শুনে স্থানীয় মানুষজন তাঁদের উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিন্তু তাঁরা যাতে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যেতে না পারেন, সে জন্য হামলাকারীরা তাঁদের বাড়ি ঘেরাও করে রাখেন। একপর্যায়ে তাঁরা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুন্নবীর নেতৃত্বে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাঁদের তিনজনকে সেখান থেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ তাঁর স্ত্রী মহামায়া মণ্ডলের পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।

সত্যজিৎ মণ্ডল অভিযোগ করেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি আশাশুনি থানায় মামলা দিতে গেলেও পুলিশ তা নেয়নি। আজ তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিলেও তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেখানে ভর্তি রয়েছেন। তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জহরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এ বিষয়ে ইসরাফিল মোল্যা বলেন, সত্যজিৎ মণ্ডলের ভাই রাধা মণ্ডল ও সাধু মণ্ডলের জমি ইজারা নিয়ে একই এলাকার আশরাফুল ইসলাম মাছ চাষ করছেন। মাছের ঘেরে পানি নেওয়ার পথ নিয়ে সত্যজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর অপর দুই ভাইয়ের বিরোধ চলছে। মারামারি হয়েছে ভাইদের মধ্যে। এখন তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে। তাঁরা আশরাফুলের মাছের ঘেরে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন।

আশাশুনি থানার পরিদর্শক বিশ্বজিত বলেন, সত্যজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর দুই ভাইয়ের মারামারি হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি প্রথমে তাঁর দুই ভাইকে আসামি করে অভিযোগ দেন। পরে দুই ভাইকে বাদ দিয়ে অন্যদের নামে অভিযোগ দেন। সে কারণে মামলা না নিয়ে তাঁকে দুই ভাইসহ অভিযোগ দিতে বলা হয়। এরপর তিনি আর থানায় আসেননি।