‘হেলায় হারাবেন না টিকা দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ’

যশোরের কেশবপুরে গণটিকাদান কর্মসুচীতে ইজিবাইকের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ টিকাদানকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়। উদ্যোগটি সবার নজর কাড়ে
ছবি: প্রথম আলো

‘আসুন, একটি টিকা নিন, জীবন বাাঁচান। হেলায় নিবন্ধন ছাড়াই টিকা নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ ছাড়বেন না।’ ইজিবাইকে এভাবেই প্রচারণার মাধ্যমে যশোরের কেশবপুর পৌর এলাকায় আজ শনিবার করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হয়েছে। এদিন সারা দেশে এক কোটি মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনতে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভ্রাম্যমাণ টিকাদানকেন্দ্র ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

সকাল থেকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দুটি ইজিবাইকে মাইকিং করে কেশবপুর পৌর শহরের ৯টি ওয়ার্ড ঘুরে টিকা দেয় ভ্রাম্যমাণ টিকাদানকেন্দ্র। দুটি ইজিবাইকে এসে স্বাচ্ছন্দ্যেই টিকা নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। গাড়িতে একজন স্বাস্থ্যকর্মী ও দুজন পৌর ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করেন। তাঁরা পৌর এলাকায় ঘুরে ঘুরে টিকা না দেওয়া মানুষকে টিকা দিয়েছেন। এ জন্য লাগেনি কোনো নিবন্ধন। মুঠোফোন নম্বর থাকলেই টিকা দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য সহকারী আবু সাঈদ বলেন, তাঁরা ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে খুঁজে টিকা দিয়েছেন। দোকানমালিক–কর্মচারীদের ডেকে এনে টিকা দিয়েছেন। অপর স্বাস্থ্য সহকারী মাহাবুবর রহমান বলেন, মাইকিং শুনে মানুষ তাঁদের কাছে এসে টিকা নিয়েছেন।

উপজেলার পরচক্রা গ্রামের মুদিদোকানি সোহেল হোসেন ভ্র্যাম্যমাণ টিকাদানকেন্দ্রে টিকা নেন। তিনি বলেন, তাঁর কাছে কোনো কাগজপত্র ছিল না। দোকানের মাল কিনে বাড়ি ফিরে টিকা দিতে গেলে আজও টিকা নেওয়া হতো না। গাড়িতে টিকা নেওয়ার সুযোগ পেয়ে তিনি খুশি। মোমিনপুর গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, মাইকিং শুনে তিনি টিকা নিতে এসেছেন। এত দিন কেন টিকা নেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর কাছে কোনো কাগজ নেই। তাই টিকা নেওয়া হয়নি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ভ্রাম্যমাণ দুটি গাড়ি থেকে শনিবার ১৬৮ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এদিন উপজেলাব্যাপী ৭ হাজার ২৫২ জনকে প্রথম ডোজ, ১ হাজার ৭১৯ জনকে দ্বিতীয় ও ২৫৩ জনকে বুস্টার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত কেশবপুরে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ২ লাখ ২৩ হাজার ২৮৩ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬৫ জন আর তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ৫২৫ জনকে। প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার শতকরা হার দাঁড়িয়েছে ৭৩.৬২, আর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৫৫.৬২ শতাংশ মানুষকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ভ্রাম্যমাণ টিকাদানকেন্দ্রের মাধ্যমে তাঁদের প্রচার–প্রচারণার উদ্দেশ্য হচ্ছে ছেঁকে উঠিয়ে সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা। যশোর জেলার মধ্যে কেশবপুর টিকাদানের ক্ষেত্রে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। ছাড়িয়ে গেছে সরকারের বেধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা।