১০ টাকার কার্ড নবায়ন করতে ১২০ টাকা ঘুষ

নলডাঙ্গা উপজেলায় হতদরিদ্রদের কাছ থেকে আদায় করা মোট ঘুষের পরিমাণ ৮ লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ টাকা। অভিযোগ ডিলারদের বিরুদ্ধে।

নাটোর জেলার মানচিত্র
প্রথম আলো

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড আছে ৬ হাজার ৮৩২ জনের। কার্ড নবায়নে তাঁদের কাছ থেকে ১২০–১৫০ টাকা করে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে। মোট ঘুষের পরিমাণ ৮ লাখ টাকার বেশি।

এমন অভিযোগ ওঠার পর ডিলারদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা। অভিযোগ তদন্ত করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

নলডাঙ্গা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে পরিবারপ্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। এ জন্য নলডাঙ্গা উপজেলায় ১১ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ডিলারদের মাধ্যমে উপজেলার ৬ হাজার ৮৩২ জন হতদরিদ্র ব্যক্তিকে চাল সরবরাহ করা হয়।

সম্প্রতি কার্ডের পাতা শেষ হয়ে যাওয়ায় কার্ড নবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিনা খরচে কার্ড নবায়ন করে দেওয়ার কথা থাকলেও ডিলাররা উপকারভোগীদের কাছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। এ হিসাবে সর্বনিম্ন ১২০ টাকা করে নিলেও মোট ৮ লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ টাকা আদায় করা হয়েছে। ঘুষের টাকা দিতে অপারগতা জানালে ভুক্তভোগীদের কার্ড বাতিলের হুমকি দেওয়া হয়। অফিস খরচের কথা বলে এই টাকা নেওয়া হয় বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

উপজেলার পশ্চিম মাধনগর গ্রামের এরশাদ সরদার বলেন, ডিলার তাঁর কাছ থেকে ১২০ টাকা আদায় করেছেন। এ টাকা দিতে না চাইলে কার্ড বাতিলের হুমকি দেওয়া হয়। মাধনগর ইউনিয়নের অভিযুক্ত ডিলার মঞ্জুর আলম কার্ড নবায়নের জন্য টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তাঁর কিছু কর্মচারী উপকারভোগীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবায়ন করা কার্ড দিয়ে ১২০ টাকা করে আদায় করেছেন। আদায় করা টাকা তিনি ভুক্তভোগীদের কাছে ফেরত দিচ্ছেন।

পাটুল হাফানিয়া গ্রামের রশিদা বেগমের স্বামী আশরাফুল ইসলামের অভিযোগ, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাঁর স্ত্রীর নবায়ন করা কার্ড নিতে গেলেও ১০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।

তবে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রওশানুল কাওছার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ডিলারদের অফিস খরচ বাবদ টাকা নিতে বলা হয়নি।

এ প্রকল্পের সভাপতি ও নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আফরোজা খাতুন বলেন, অভিযোগ ওঠার পর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।