‘১০ টাকার’ জন্য শিশুকে গলা কেটে হত্যা

খুন
প্রতীকী ছবি

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় বাড়ির পাশের আমবাগানে ৯ বছরের এক শিশুকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের কানাইডাঙ্গা গ্রামের বৃত্তিপাড়ায় আজ শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ইয়ামিনের ভাইয়ের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, ১০ টাকার জন্য শিশুটিকে হত্যা করেছে জাহিদ হাসান নামের এক কিশোর। বিষয়টি জানাজানির পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। মরদেহের সুরতহাল শেষে বিকেল সাড়ে চারটায় বাড়ির পাশের মজিবর বিশ্বাসের আমবাগান থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে।

নিহত ইয়ামিন কানাইডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। যার বিরুদ্ধে শিশুটিকে খুনের অভিযোগ উঠেছে সেই কিশোর জাহিদ কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আসাদুল হকের ছেলে।

নিহত ইয়ামিনের সহোদর বড় ভাই ইমন আলীর (১১) উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, দুপুরে ইমন তার ছোট ভাই ইয়ামিন ও কয়েকজন বন্ধু মিলে আমবাগানে খেলছিল। ওই সময় জাহিদ এসে ৩০ টাকা দিয়ে ইয়ামিনকে মুড়ি কিনতে পাঠায়। ইয়ামিন ২০ টাকার মুড়ি কেনে এবং ১০ টাকায় নিজে কিছু কিনে খায়। বিষয়টি জানার পর জাহিদ শিশু ইয়ামিনকে একটি আমগাছে বেঁধে বেধড়ক পেটায়। এ সময় ইমন বাড়ি গিয়ে সবাইকে ঘটনা খুলে বলে। বাকি শিশুরা ভয়ে চলে যায়। এই সুযোগে ইয়ামিনকে গলা কেটে খুন করে আমবাগানে ফেলে পালিয়ে যায় জাহিদ। খবর পেয়ে শিশুটির নানা-নানিসহ বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কনক কুমার দাসও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

প্রতিবেশী মজিবার বিশ্বাস বলেন, কানাইডাঙ্গা গ্রামের দিনমজুর আবদুর রাজ্জাকের মেয়ে রিনা খাতুনের সঙ্গে ১৫ বছর আগে জয়রামপুরের সেলিম উদ্দিনের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাঁদের দুটি ছেলেসন্তান হয়। ছোট ছেলে ইয়ামিনের বয়স যখন এক বছর, তখন থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছাড়াছাড়ি হওয়ার কারণে রিনা কানাইডাঙ্গা গ্রামে বাবার বাড়িতে বসবাস করেন।

আরেক প্রতিবেশী আবদুল কুদ্দুস বলেন, স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর অসহায় রিনা খাতুন অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে ছেলে দুটিকে মানুষ করছিলেন। ছেলে দুটিকে নিয়ে তাঁর অনেক আশাভরসা ছিল। কিন্তু কী কারণে ইয়ামনিকে এভাবে হত্যা করা হলো, তা কেউই বুঝতে পারছেন না।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক বলেন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে দেওয়ায় ইয়ামিনের মৃত্যু হয়েছে। জাহিদ নামের এক কিশোর ১০ টাকার হিসাব নিয়ে রাগের বশবর্তী হয়ে ইয়ামিনকে খুন করে থাকতে পারে। তাকে ধরতে অভিযান চলছে। খুব তাড়াতাড়ি ধরা সম্ভব হবে।