১৪ বছর পর মুক্তি পেয়ে চারজনকে কোপালেন, অবশেষে গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি

বরিশালের হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামের হাশেম বাবুর্চির ছেলে নুরু বাবুর্চি। অস্ত্র মামলায় ১৪ বছর কারাভোগের পর গত জুলাইয়ে মুক্তি পান। মুক্তি পেয়েই পাঁচ মাসের মধ্যে তিনি আপন ভাই, ভাবি, চাচাতো ভাই ও ভাতিজাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। এরপর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পাশের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রাম থেকে তিন ছেলেসহ নুরু বাবুর্চিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

নুরুর সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া তাঁর তিন ছেলে হলেন এনামুল বাবুর্চি (২১), ইমরান বাবুর্চি (১৯) ও এহসান বাবুর্চি (১৭)।

এলাকাবাসী জানান, অস্ত্র মামলায় ১৪ বছর কারাভোগের পর গত জুলাইয়ে মুক্তি পেয়ে নুরু বাবুর্চি পাঁচ মাসের মধ্যে আপন ভাই দুলাল বাবুর্চি, তাঁর স্ত্রী নিলুফা বেগম এবং চাচাতো ভাই কাঞ্চন বাবুর্চিকে কুপিয়ে জখম করেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর কাঞ্চন বাবুর্চির ছেলে শহীদ বাবুর্চিকে কুপিয়ে আহত করেন।

নুরু বাবুর্চি জেল থেকে মুক্তি পেয়েই পাঁচ মাসের মধ্যে তিনি আপন ভাই, ভাবি, চাচাতো ভাই ও ভাতিজাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। এরপর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

নুরুর বড় ভাই দুলাল বাবুর্চির পরিবারের সদস্যরা জানান, তাঁদের সঙ্গে নুরুর পরিবারের জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। গত ২৮ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে দুলাল মোটরসাইকেলে করে উপজেলার কাউরিয়া বাজার থেকে নিজের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। বাড়িতে ঢোকার সময় ওত পেতে থাকা তাঁর ছোট ভাই নুরু ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। এতে দুলাল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে এলোপাতাড়ি কোপান নুরু ও তাঁর ছেলেরা। তাঁর বাঁ পা কুপিয়ে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। এ সময় দুলালের স্ত্রী নিলুফা স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাঁকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকেই বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর চাচাতো ভাই কাঞ্চন বাবুর্চি ও সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার কাঞ্চন বাবুর্চির ছেলে শহীদ বাবুর্চিকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন নুরু ও তাঁর ছেলেরা।

নুরু বাবুর্চি ভয়ংকর সন্ত্রাসী। একটি অস্ত্র মামলায় ১৪ বছর কারাভোগ করে গত বছর জুলাইয়ে মুক্তি পান। এরপর একে একে তিনি রক্ত সম্পর্কের চারজনকে কুপিয়ে আহত করেন। এতে এলাকায় এক আতঙ্কজনক পরিবেশে সৃষ্টি হয়েছে।
শাহজাহান তালুকদার, চেয়ারম্যান, গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)

গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজাহান তালুকদার বলেন, নুরু বাবুর্চি ভয়ংকর সন্ত্রাসী। একটি অস্ত্র মামলায় ১৪ বছর কারাভোগ করে গত বছর জুলাইয়ে মুক্তি পান। এরপর একে একে তিনি রক্ত সম্পর্কের চারজনকে কুপিয়ে আহত করেন। এতে এলাকায় এক আতঙ্কজনক পরিবেশে সৃষ্টি হয়েছে।

হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসীম কুমার সিকদার বলেন, নুরু বাবুর্চির সঙ্গে তাঁর তিন ছেলে এনামুল, ইমরান ও এহসানকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলার প্রতিটি ঘটনায় নুরুর সঙ্গে তাঁর তিন ছেলেও অংশ নিয়েছেন। নুরু বাবুর্চিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কাল রোববার তাঁকে আদালতে তোলা হবে। নুরু বাবুর্চির বিরুদ্ধে দলবদ্ধ ধর্ষণসহ হিজলা থানায় মোট ৬টি মামলা রয়েছে।