‘২২ বছরেও বিচার পাইনি’

১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ গভীর রাতে যশোর টাউন হল মাঠে উদীচীর সম্মেলনে বোমা হামলা চালানো হয়। এতে নিহত হন ১০ জন।

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সম্মেলনে ভয়াবহ বোমা হামলার ২২ বছর পূর্তি হচ্ছে আজ। ওই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে নানা প্রতিবাদী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ গভীর রাতে যশোর টাউন হল মাঠে উদীচীর সম্মেলনে বোমা হামলা চালানো হয়। এতে নিহত হন ১০ জন। ২৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হন। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার আজও শেষ হয়নি।

এ বিষয়ে উদীচী যশোর জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বলেন, ‘উদীচী হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ২২ বছরেও আমরা বিচার পাইনি। এটা সাংস্কৃতিক কর্মীদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।’

উদীচী যশোর জেলা সংসদের উদ্যোগে আজ শনিবার বিকেলে যশোর টাউন হল মাঠে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা, প্রতিবাদী গান ও কবিতা পরিবেশিত হবে।

হামলায় আহত সুকান্ত দাস বলেন, উদীচী ট্র্যাজেডির ঘটনা ঘটেছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। পরে আওয়ামী লীগ আরও তিনবার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। স্বাধীনতার সপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকতেও যখন বিচার হয় না, তখন খুব কষ্ট লাগে।

বোমা হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়। প্রথমে কোতোয়ালি পুলিশ মামলার তদন্ত শুরু করলেও পরে সিআইডির ওপর ন্যস্ত হয়। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামসহ ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। ৭ বছর পর ২০০৬ সালের ৩০ মে মামলার রায় দেন আদালত। রায়ে সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

২০১০ সালের ৮ জুন ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল আবেদনের শুনানি হয়। শুনানির পর আসামিদের বক্তব্য জানতে চেয়ে বিচারিক বেঞ্চ নোটিশ জারির আদেশ দেন। হাইকোর্ট থেকে জারি করা এ–সংক্রান্ত নথিপত্র ২০১০ সালের ২৬ জুলাই যশোরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এসে পৌঁছায়। এরপর উচ্চ আদালতের নির্দেশে খালাস পাওয়া আসামিরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। এ অবস্থায় মামলার বিচারকাজ ঝুলে রয়েছে।