৩০৯ পর্যটক নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে জাহাজ চলাচল শুরু

পরীক্ষামূলকভাবে টেকনাফ-সেন্ট মাটিন নৌপথে একটি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত জাহাজ জাহাজ চলাচল শুরু করেছে। প্রথমদিন সে জাহাজে চড়েন ৩০৯ পর্যটক । মঙ্গলবার দুপুরে সেন্ট মার্টিন জেটিঘাটে
প্রথম আলো

কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে ২২৯ দিন পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টায় পরীক্ষামূলকভাবে কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন নামের একটি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত জাহাজ সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা করে। ৩০৯ জন পর্যটক নিয়ে আড়াই ঘণ্টা পর জাহাজটি নিরাপদে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পৌঁছায়।

সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, টেকনাফের দমদমিয়া এলাকা থেকে কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইনের টিকিটের জন্য ভিড় করেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকেরা। অন্যদিকে টিকিট না পেয়ে শতাধিক পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে পারেননি। দুপুর ১২টার পর পর্যটক নিয়ে জাহাজটি সেন্ট মার্টিন জেটিতে পৌঁছালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদের নেতৃত্বে তাঁদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক হাসানুল আমিন বলেন, করোনার কারণে এত দিন বের হতে পারেননি। তাই পরিবারের ১০ জন সদস্যদের নিয়ে কিছু সময় কাটানোর জন্য সেন্ট মার্টিনে আসলেন।

কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইনের টেকনাফের ব্যবস্থাপক শাহ আলম বলেন, প্রতিদিন সকাল সাড়ে নয়টায় তাঁদের জাহাজ টেকনাফের দমদমিয়া ঘাট থেকে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। আর বেলা সাড়ে তিনটায় সেন্ট মার্টিন থেকে টেকনাফের উদ্দেশে জাহাজ রওনা হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সাগর উত্তাল হওয়ার পাশাপাশি কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কায় দুর্ঘটনা এড়াতে চলতি বছরের ৩১ মার্চ থেকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন ও সেন্ট মার্টিন-কক্সবাজার দুটি নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সময় এ দুটি নৌপথে ১০টি জাহাজ চলাচল করছিল। এর মধ্যে ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাতে পর্যটক ওঠা–নামার জেটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই জেটির মেরামত কাজ করার পর পরীক্ষামূলকভাবে চলাচলের জন্য কেয়ারি ক্রুজ জাহাজকে অনুমতি দেওয়া হয়।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, কিছুটা দেরি হলেও চলতি পর্যটন মৌসুমের শুরুতে পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। পর্যটকদের ওঠা-নামায় সমস্যা যেন না হয়, সে জন্য সেন্ট মার্টিনের জেটি মেরামত করা হয়েছে। এ নৌপথে আরও কয়েকটি জাহাজ চলাচলের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। জাহাজ কর্তৃপক্ষ ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে পারবে না। বেড়াতে আসা পর্যটকদের সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ সুরক্ষা রাখার পাশাপাশি পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের টেকনাফের পরিদর্শক আমজাদ হোসেন বলেন, এই নৌপথে চলাচলের জন্য আরও চারটি জাহাজ ছাড়পত্র পেয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনুমতি পেলে সেগুলো পর্যটক পরিবহন শুরু করবে।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা ও রেডিও নাফের কর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় দীর্ঘদিন পর সেন্ট মার্টিন দ্বীপে উৎসবের আমেজ লেগেছে।