৫৭ বছরের অপেক্ষা শেষ, ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ দেখে জনতার হর্ষধ্বনি

৫৭ বছর অপেক্ষার পর ভারতের হলদিবাড়ী সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশের চিলাহাটি এসে পৌঁছায় ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি। ট্রেনটি দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় জমায়
ছবি: প্রথম আলো

দীর্ঘ প্রায় ৫৭ বছর অপেক্ষার পর বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলো আজ বুধবার। নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট পর বেলা ২টা ১০ মিনিটে নীলফামারীর চিলাহাটি রেলস্টেশনে এসে পৌঁছায় ট্রেনটি। এর মধ্য দিয়ে আন্তদেশীয় যাত্রীবাহী ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের মধ্যে চলাচল শুরু করল।

মিতালী এক্সপ্রেসের আগমন উপলক্ষে সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে চিলাহাটি রেলস্টেশন পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার রেলপথের দুই ধারে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। আগত যাত্রীদের হাত নেড়ে স্বাগত জানান দর্শনার্থীরা। চিলাহাটি স্টেশনে কোনো আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও রেলের ইঞ্জিন ও জনবল পরিবর্তন করে বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে ১২ জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ট্রেনটি ভারতীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সময়ের ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট আগে ৯টা ৩০ মিনিট নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে। ১০টা ৩৫ মিনিটে ভারতের হলদিবাড়ি স্টেশনে পৌঁছায় ট্রেনটি। সেখানে অবস্থানের পর বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা ১ মিনিটে সীমান্তরেখা অতিক্রম করে।

চিলাহাটির সহকারী স্টেশন মাস্টার মো. ময়নুল হোসেন বলেন, ট্রেনটি চিলাহাটি স্টেশনে আসার নির্ধারিত সময় ছিল বেলা ১টা ৫৫ মিনিট। কিন্তু সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে চিলাহাটি স্টেশন পর্যন্ত সাত কিলোমিটার রেলপথের দুই ধারে উৎসুক জনতার ভিড় ছিল। তাঁরা হাত নেড়ে, উল্লাস করে ট্রেনটিকে স্বাগত জানান। এ কারণে ট্রেনটি ধীর গতিতে আসে। ফলে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।

মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের ওই বহরে আছে স্লিপার কোচ চারটি, এসি চেয়ার চারটি, ব্রেক একটি ও পাওয়ার কার একটি। মোট আসনসংখ্যা ৪০৮টি হলেও প্রথম দিন যাত্রী আসেন ১২ জন। এর মধ্যে ভারতীয় যাত্রী ছিলেন আটজন এবং বাংলাদেশি চারজন। ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনে ট্রেনটির রাত ১০টা ৩০ মিনিটে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে পুরোনো এই রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয় ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়। এর পর থেকে পরিত্যক্ত ছিল রেলপথটি। ২০২০ সালে ১৭ ডিসেম্বর এই পথে পণ্যবাহী ট্রেন এবং গত বছরের ২৭ মার্চ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করোনা মহামারির কারণে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল অব্যাহত থাকলেও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করা যাচ্ছিল না।