শিশুকে খুন করে গেলেন আইনজীবীর কাছে, আইনজীবী খবর দিলেন পুলিশে

হত্যার শিকার নুসরাত খাতুন (৬)
ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের লালপুরে নিখোঁজের চার দিন পর এক শিশুর বস্তাবন্দী লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে। একটি সূত্র থেকে খবর পেয়ে উপজেলার দুবলিবনা বিলের একটি ধানখেত থেকে আজ শনিবার সকালে ওই লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশুটির ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন আছে।

ওই শিশুর নাম নুসরাত খাতুন (৬)। সে উপজেলার আবদুলপুর গ্রামের মো. বাবুর মেয়ে। পড়ত আবদুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে। শিশুটিকে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে প্রতিবেশী এক কিশোর (১৩) ও তার বাবাকে (৩৮) আটক করেছে পুলিশ। লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফজলুর রহমান এ ঘটনা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, নুসরাত গত মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পাশ থেকে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মিলছিল না। পরে তার বাবা মঙ্গলবার রাতে লালপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে নাটোরের এক আইনজীবী পুলিশকে ফোন করে জানান, নুসরাতকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারী এক কিশোর। ওই কিশোরের বাবা গতকাল রাতে তাঁর কাছে এ হত্যার কথা জানিয়ে আইনি সহায়তার জন্য এসেছিলেন। এরপর লালপুর থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই কিশোর ও তার বাবাকে আটক করে এবং তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দুবলিবনা বিলের একটি ধানখেত থেকে বস্তাবন্দী নুসরাতের লাশ উদ্ধার করে।

ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই কিশোর নুসরাতের লাশ বাড়ির পরিত্যক্ত শৌচাগারের গর্তে ফেলে রাখে। গতকাল সন্ধ্যায় গন্ধ ছড়াতে শুরু করলে গভীর রাতে লাশটি বস্তায় পুরে দুবলিবনা বিলের একটি ধানখেতে ফেলে আসা হয়।

আটক কিশোর এলাকাবাসী ও পুলিশের সামনে শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সে বলে, মঙ্গলবার সে বাড়িতে গবাদি পশুর জন্য খড় কাটছিল। এ সময় নুসরাত সেখানে গিয়ে খড় এলোমেলো করছিল। বিরক্ত হয়ে সে হাঁসুয়ার উল্টো দিক দিয়ে তার ঘাড়ে আঘাত করে। এতে সে মারা যায়। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই কিশোর নুসরাতের লাশ বাড়ির পরিত্যক্ত শৌচাগারের গর্তে ফেলে রাখে। গতকাল সন্ধ্যায় গন্ধ ছড়াতে শুরু করলে গভীর রাতে লাশটি বস্তায় পুরে দুবলিবনা বিলের একটি ধানখেতে ফেলে আসা হয়।

গতকাল রাতে ওই কিশোরের বাবা তাঁর আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে নাটোর শহরের ওই আইনজীবীর কাছে গিয়ে ঘটনাটি জানান এবং আইনি পরামর্শ চান। আইনজীবী বিষয়টি লালপুর থানাকে জানালে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

নিহত শিশুর বাবা মো. বাবু বলেন, ‘আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’