সরু সড়ক, লেগে থাকে যানজট 

মেহেরপুর পৌর শহরের বড় বাজার এলাকার চৌরাস্তায় সব সময় যানবাহনের ভিড় লেগে থাকে। গতকাল দুপুরেছবি: প্রথম আলো

মেহেরপুর পৌর শহরে ব্যস্ততম সড়ক বড় বাজার এলাকা। এ এলাকায় বড় বড় কাপড়ের দোকান, জুতা স্যান্ডেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান রয়েছে। সে কারণে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভিড় লেগে থাকে বাজারটিতে। এই সড়কে যানজট লেগে থাকে সব সময়।

স্থানীয় লোকজন বলেন, বড় বাজারের এলাকার সড়কগুলো সরু। এ ছাড়া দোকানপাটের কারণে লোকজনের ভিড় থাকে। অনেকে দোকানের সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে কেনাকাটা করেন। ফলে স্বস্তি নিয়ে চলাচল করা দায়।

মেহেরপুর পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই সড়কের বাঁ পাশে টিঅ্যান্ডটি সড়ক, সোজা গিয়ে মিলেছে কাথুলী এলাকায়। ডান দিকে সদর থানা। এই চৌরাস্তায় যানজট লেগে থাকে দিনভর। এখন পর্যন্ত পৌর কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স দিয়েছে দুই হাজারের অধিক ইজিবাইকের। তবে জেলা ইজিবাইক চালক-মালিক সমিতির হিসাবে ১৮টি ইউনিয়ন থেকে গড়ে প্রতিদিন হাজার দুয়েক ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করছে।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, পৌরসভার পক্ষ থেকে বেশ কয়েক দফা বাজার কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে তিন ফুট নালা ও ফুটপাতের জন্য রেখেছেন। কিন্তু নালার ওপর সড়কের পাশের দোকানে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা তাঁদের মোটরসাইকেল রাখেন। অনেকে ডাব বিক্রি করেন। অনেকে দোকানের সাইনবোর্ড রেখেছেন ফুটপাতে। ফলে পথচারীদের সড়ক দিয়েই চলতে করতে হচ্ছে।

বড় বাজারের চৌরাস্তার মোড়ে মৌসুমি ফল বিক্রেতা মোস্তাক আহমেদের দোকান। পৌরসভার নালার তিন ফুট জায়গায় তাকে তাকে সাজিয়ে রেখেছেন তরমুজ। তিনি বলেন, কাজের সুবিধার্থে এভাবে ফল সাজিয়ে রেখেছেন।

চৌরাস্তার ডান দিকে কালীমন্দির সড়ক। এই সড়ক ১০ মিটার চওড়া। এর ওপরে ডাবওয়ালা, ফল বিক্রেতা, তরমুজ বিক্রেতারা ফুটপাত দখল করে রেখেছেন। এই স্থানে সবচেয়ে বেশি যানজট লেগে থাকে। 

বড় বাজার মোড়ের নোমান শেখ কাপড়ের ব্যবসায়ী। তাঁর দোকানটি বেশির অংশ সড়কের মাঝ বরাবর পড়েছে। বড় যানবাহন ট্রাক, বাস যাতায়াত করতে গিয়ে তার দোকানে সামনের অংশে অসংখ্যবার ধাক্কা খেয়েছে। ওই দোকানে কর্মচারী সুজন মিয়া বলেন, এই সড়কে যাতায়াত করতে মানুষ খুব ভোগান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে ইজিবাইক জট তো সব সময় লেগেই থাকে। সড়কের ওপর ইজিবাইকগুলো ইচ্ছেমতো ঘোরানো হচ্ছে। সিগন্যাল ছাড়াই হঠাৎ করে রাস্তায় ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে রাখা ছিল। ইজিবাইকচালকদের এসব নিয়ন্ত্রণহীন চলাফেরা নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে মারামারির ঘটনাও ঘটে।

পৌর শহরের বাসিন্দা ইজিবাইকচালক ফনি মিয়া বলেন, পৌরসভা থেকে যে সংখ্যক ইজিবাইকের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, তার প্রায় দ্বিগুণ ইজিবাইক অবৈধভাবে শহরে চলাচল করে। অবৈধ ইজিবাইকের চলাচল বন্ধ করা হলে যানজট কমে যাবে।

মেহেরপুর পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান বলেন, পৌর শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। যানজট নিরসনে পৌরসভা ইতিমধ্যে কাজ করেছে। কিন্তু সরু সড়কের কারণে কোনো উপকার হচ্ছে না। একটি ট্রাক আসলেই যানজট বেধে যায়। পৌর কর্তৃপক্ষ শিগগিরই অবৈধ ইজিবাইকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবে। 

গাংনী ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যাপক এনামুল আজিম বলেন, মেহেরপুর অতি প্রাচীন একটি শহর। ওই সময়ে সরু সড়ক ছিল,
বাজারও ছোট ছিল। এখন সময় বদলেছে। এই সড়ক আরও প্রশস্ত করতে হবে। অনেকে সরকারি জায়গা দখল করে আছে। পৌরসভা চাইলে সড়কটি প্রশস্ত করা সম্ভব।