১৩ দিন অবস্থান ধর্মঘটের পর ‘আমরণ অনশনে’ অস্থায়ী কর্মচারীরা

চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে ‘আমরণ অনশনে’ বসেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারীরা। আজ রোববার দুপুর সোয়া একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে টানা ১৩ দিন অবস্থান ধর্মঘটের পর আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে ‘আমরণ অনশনে’ বসেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী কর্মচারীরা। কর্মচারীদের ভাষ্য, ১৩ দিন ধরে প্রশাসন থেকে কোনো কার্যকর বা লিখিত আশ্বাস না পাওয়ায় তাঁরা আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

১৭ জুলাই সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট করছেন দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।

আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনের ফ্লোরে ত্রিপল বিছিয়ে কাঁথা-বালিশ নিয়ে অনশনে বসেছেন ৮০ জন কর্মচারী। তাঁদের মধ্যে তিনজন নারী কর্মচারী তাঁদের সন্তানকে নিয়ে অনশন করছেন। কর্মচারীরা যেখানে অনশনে বসেছেন, তার পাশে প্ল্যাকার্ডে চাকরি স্থায়ী করার দাবি।

আরও পড়ুন

কর্মচারীদের ভাষ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৪২ জন দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী আছেন। তাঁরা আগে দিনপ্রতি ৩৩০ টাকা মজুরি পেতেন। পরে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের মজুরি ৪০০ টাকা করা হয়। তবে এর বাইরে তাঁরা কোনো বোনাস বা ইনক্রিমেন্ট পান না। ফলে ২০২০ সাল থেকে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা। তার পরিপ্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাঁদের চাকরি স্থায়ীকরণের আশ্বাস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আশ্বাসের কোনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় আবারও আন্দোলনে বসেছেন কর্মচারীরা।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের অস্থায়ী কর্মচারী মো. বায়েজিদ বলেন, ১৭ জুলাই অবস্থান ধর্মঘট শুরু করলে প্রশাসন থেকে তাঁদের বলা হয় ২৭ জুলাই ইউজিসির সঙ্গে সভা করে পদ অনুমোদন নিয়ে আসা হবে। কিন্তু ২৭ জুলাই পার হলেও প্রশাসন থেকে কোনো লিখিত আশ্বাস তাঁরা পাননি। তাই বাধ্য হয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান প্রথম আলোকে বলেন, চাকরি স্থায়ী করার সিদ্ধান্ত ইউজিসি থেকে নেওয়া হয়। ২৭ জুলাই ইউজিসির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়। ওই আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁদের মধ্য থেকে ধাপে ধাপে চাকরি স্থায়ী করার জন্য অনুরোধ করে। তবে ইউজিসির চেয়ারম্যান কয়েকটি পদ অনুমোদন দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। তবে চেয়ারম্যান ইউজিসির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।