শরীয়তপুরে লোকালয়ের মাছের খামার থেকে কুমির উদ্ধার

কুমিরটিকে খামারে শিকল ও দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় মাছের খামার থেকে একটি কুমির উদ্ধার করেছেন জেলেরা। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার আলওয়ালপুর ইউনিয়নের গাইমারা এলাকার একটি খামারে জেলেদের পাতা ফাঁদে ধরা পড়ে কুমিরটি। সেটিকে খামারে শিকল ও দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে যাচ্ছে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি দল।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার গাইমারা এলাকায় মাছের আটটি খামার আছে। এর মধ্যে ৫০ বিঘা জমির ওপর খলিল কাজী নামের এক ব্যক্তির একটি খামার আছে। সেখানে মিঠাপানির কার্পজাতীয় মাছের চাষ করা হয়। ওই খামারে গত শনিবার কুমিরটি দেখা যায়। এরপর গতকাল জেলেরা কুমিরটিকে ধরতে গর্তের মুখে ফাঁদ পাতেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে কুমিরটিকে শিকল ও দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন তাঁরা। এরপর মাছের খামারের এক কোণে তা বেঁধে রাখা হয়।

ওই মাছের খামারের শ্রমিক সামাদ কাজী বলেন, ‘সাত-আট দিন আগে খামারের ভেতর বড় লেজের গুইসাপের মতো দেখতে পেয়েছিলাম। তখন গুইসাপ ভেবে গুরুত্ব দিইনি। তিন দিন আগে আমার ভাগনে খেয়াল করেছে, খামারের পাড়ে বড় একটি গর্ত। সেখানে কুমিরের পায়ের ছাপ দেখতে পায়। গতকাল আমরা ওই গর্তের মুখে ফাঁদ পাতি। রাতে সেই ফাঁদে কুমির ধরা পড়ে। এরপর আমরা ঘটনাটি গোসাইরহাট থানায় জানাই।’ কুমিরটির দৈর্ঘ্য সাত ফুট বলে জানান তিনি।

আলওয়ালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান গনি বলেন, ‘যে এলাকার মাছের খামারে কুমিরটি পাওয়া গেছে, তার থেকে অন্তত চার কিলোমিটার দূরত্বে মেঘনা নদী। দুই কিলোমিটার দূরত্বে খাল আছে। অন্যদিকে মাছের খামারটির পাড় উঁচু হওয়ায় বর্ষায়ও সেটি তলিয়ে যায় না। এমন একটি বদ্ধ মাছের খামারে কীভাবে কুমির এল, সেটিই প্রশ্ন। এ ঘটনায় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। আমরাও দুশ্চিন্তায় পড়েছি।’

গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির প্রথম আলোকে বলেন, কুমিরের ছবি ও ভিডিও পাওয়ার পর বন্য প্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের জানান তিনি। ঢাকা থেকে একটি প্রতিনিধিদল গোসাইরহাটে আসছে। ওই কর্মকর্তারা ছবি ও ভিডিও দেখে নিশ্চিত করেছেন, এটি লোনাপানির কুমির। কীভাবে লোনাপানির কুমির মিঠাপানির মাছের খামারে এল, তা তদন্ত করা হচ্ছে। বিষয়টি কিছুটা উদ্বেগের।