আন্দোলনকারী ছাত্রীদের পোশাক নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হকের কাছে আবেদনটি জমা দেন বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনীম (পুষ্প)।
সম্প্রতি আন্দোলনকারী ছাত্রীদের পোশাক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গ্রিন ফোরামের সদস্য অধ্যাপক নাসির উদ্দীন মিঝির আপত্তিকর মন্তব্যের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুঃখ প্রকাশ করে নিঃশর্ত ক্ষমা চান ওই শিক্ষক।
জানতে চাইলে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই শিক্ষক একাধিক বিষয়ে আপত্তিকর কথা বলেছেন। এমনকি আমাকে মাইক কেন দেওয়া হয়েছে, সে ব্যাপারেও কথা বলে আমার বাক্স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন। শিক্ষকের দুঃখ প্রকাশকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু অবশ্যই তদন্ত হতে হবে এবং ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যতে আরও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। সে জন্য প্রতিবাদের জায়গা থেকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি অডিও ক্লিপে নাসির উদ্দীন মিঝিকে শহীদ সাজিদ সম্পর্কে ‘কোথাকার কোন মৃত ছেলে, সে তো মইরাই গেছে’ বলে অবমাননাকর মন্তব্য করতে শোনা যায়। একই সঙ্গে তিনি সাজিদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত এক নারী শিক্ষার্থীকে নিয়ে কটূক্তি করেন। ওই বক্তব্য নারী বিদ্বেষমূলক, অপমানজনক ও শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে হেনস্তা করার শামিল।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিনি (শিক্ষক) ‘শা... আন্দোলন’ বলে বিদ্রূপ করেন এবং ‘ওই মেয়ে আল কোরআনের কে, ওর হাতে মাইক দিছে কে’ বলে আন্দোলনের অধিকার খর্বের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ক্ষোভ ও জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ৩০ ঘণ্টার মধ্যে ওই শিক্ষককে পদ থেকে বহিষ্কার করে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দেওয়া লিখিত আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। এটি উপাচার্য বরাবর পাঠানো হবে। পরে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।