বাউফলে ইউপিতে উপনির্বাচনে আ.লীগ নেতার সমর্থনকারী জামায়াত নেতা

আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হকের সঙ্গে জামায়াত নেতা সাইদ। গতকাল মঙ্গলবার বাউফল উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে কেশবপুর ইউপির চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক ওরফে অপুর মনোনয়নপত্রে সমর্থনকারী হয়েছেন জামায়াতের এক নেতা। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চলছে সমালোচনা।

ওই চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম এনামুল হক। তিনি কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক এবং কেশবপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের শ্যালক। সমর্থনকারী জামায়াত নেতার নাম মোহাম্মাদ আবু সাঈদ। তিনি উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের প্রচার সম্পাদক।

২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট ইউপি চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন ওরফে পিকুর মৃত্যুর পর কেশবপুর ইউপি চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য হয়। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল গতকাল মঙ্গলবার। এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ছয়জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তবে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের কোনো নেতা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ব্যক্তিরা হলেন কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মালেক মিয়া, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউদ্দিন ওরফে সুজন, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ওরফে তুহিন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক এনামুল হক। অন্য দুই প্রার্থীর দলীয় কোনো পরিচয় নেই। তাঁরা হলেন লতুফা বেগম ও মো. মেজবাউল সাহসান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এনামুলের মনোনয়নপত্রে জামায়াত নেতা মোহাম্মাদ আবু সাঈদ শুধু সমর্থনই করেননি, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির মুজাম্মেল মৃধাসহ জামায়াতের সমর্থক ও অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জামায়াত নেতা আবু সাঈদ বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী এনামুল হক তাঁর আত্মীয় হয়। এ জন্য তাঁর সমর্থনকারী হয়েছেন। এটা নিয়ে  তাঁর দলের কোনো চাপ নেই বলেও তিনি দাবি করেন।

এনামুল হক বলেন, ‘নির্বাচনে তো দলীয়  প্রতীক নেই। আমার জনপ্রতিনিধি হতে হলে সব দলের মানুষের ভোট লাগবে। তাই যে কেউ আমার সমর্থনকারী হতে পারে। এটা কোনো বিষয় না, একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম খান বলেন, আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান ও আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করে এনামুল হক যা করেছেন তা লজ্জাজনক। স্বাধীনতার পক্ষের দল আওয়ামী লীগ। সেই দলের নেতা হয়ে জামায়াত নেতার সমর্থনে তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে পারেন না। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।

সংগঠনের নেতা আওয়ামী লীগ নেতার সমর্থনকারী হওয়ায় জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। উপজেলার এক জামায়াত নেতা বলেন, যেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে তাঁরা অংশগ্রহণ করছেন না, ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকছেন। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতার সমর্থনকারী হয়ে সংগঠন পরিপন্থী কাজ করেছেন।