শহরের অর্ধেক সড়কই কঁাচা

পিচঢালাই উঠে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে যায়। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

গাইবান্ধা পৌরসভার সুখনগর উত্তর ধানঘড়া থেকে খানকাশরিফ এলাকা পর্যন্ত সড়কটি বেহাল। গতকাল সকালে খানকাশরিফ এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

আর এক বছর পর গাইবান্ধা পৌরসভার বয়স ১০০ বছর হচ্ছে। প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভায় রাস্তাঘাটের উন্নয়ন তেমন হয়নি। পৌরসভার অর্ধেক রাস্তা কাঁচা। মোট ৫৫ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে পাকা সড়ক মাত্র ১৮ কিলোমিটার। অনেক স্থানে পাকা সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। সড়কের পাশে নালা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতে সড়ক পানিতে ডুবে যায়। এতে পৌরসভার বাসিন্দারা ভোগান্তি পোহান।

গাইবান্ধা পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, ১৯২৩ সালের ১ অক্টোবর পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০২ সালে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পায়। পৌর এলাকায় মোট ৫৫ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে পাকা ১৮ কিলোমিটার, আধা পাকা ৯ কিলোমিটার ও কাঁচা রাস্তা আছে ২৮ কিলোমিটার।

গতকাল শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌরশহরের সুখনগর উত্তর ধানঘড়া থেকে খানকাশরীফ এলাকা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরা। পিচঢালাই উঠে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে থাকে। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। রিকশাচালক সোহেল মিয়া (৩৫) বলেন, ‘ভাঙা আসতা দিয়া একসা চলাতে হামারঘরে জীবোন চলি যাবার নাগচে। পোত্তেক দিন একসার এসপোক (যন্ত্র) নসটো হবার নাগচে। তাও সোরকার আসতাকোনা ভালো করে না। আর কয় দিন কসটো করমো।’

গাইবান্ধা নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই সড়ক বেহাল। এর সঙ্গে পাকার সড়কের পাশে নর্দমা নেই। ফলে শহরের ব্যস্ততম ডিবি রোডের কাচারি বাজার এলাকায়, সিভিল সার্জনের কার্যালয় চত্বর, খাঁপাড়ায় গাইবান্ধা মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র (মাতৃসদন) রোড, মধ্যপাড়া স্কুল রোড, সুখশান্তির বাজার-খানকাশরীফ সড়কে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়।

কলেজশিক্ষক সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, গর্তে জমে থাকা পানির ওপর দিয়ে বড় যানবাহন যাওয়ার সময় পানি ছিটে দুই পাশের বাড়িঘরে ও দোকানপাটে যাচ্ছে। গাড়ির আরোহী ও পথচারীদের গায়ে লেগে পোশাক নোংরা হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় যানবাহন উল্টে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে নেই একটি নর্দমাও।

পৌর শহরের দক্ষিণ ধানঘড়া, সরকারপাড়া, ডেভিট কোম্পানিপাড়া, শাপলা, মুন্সিপাড়া, বানিয়ারজান, পূর্বপাড়া, কুপিপাড়া এলাকায় কাঁচা রাস্তা বেশি। সেগুলোও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হয় না। শহরের বন বিভাগ রোড দিয়ে দক্ষিণ ধানঘড়া এলাকায় যেতে হয়। স্থানীয় আল-আমিন বলেন, ‘জেলা শহরের রাস্তা এখনো কাঁচা। ভাবাই যায় না।’

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল হক বলেন, আগামী পাঁচ বছরের জন্য পৌর উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ৩৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সড়কের উন্নয়নে চাওয়া হয়েছে ১৪০ কোটি টাকা।

গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মো. মতলুবর রহমান বলেন, পৌরসভা চলে নিজস্ব অর্থায়নে। কর্মচারী–কর্মকর্তাদের বেতন দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। সড়ক উন্নয়নে বরাদ্দের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেও কাজ হচ্ছে না।