গোয়ালন্দে ইয়াবা বড়ি দিয়ে নারীকে ফাঁসানোর চেষ্টা, ভিডিও ফুটেজে রক্ষা
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় মাদকসেবী ও পুলিশের কথিত সোর্সদের চক্রান্তে ফেঁসে যাচ্ছিলেন এক চা–বিক্রেতা নারী (৩৫)। তবে পাশের এক দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে দেখানোয় রক্ষা পেয়েছেন ওই নারী। ভিডিও ফুটেজ দেখে ওই নারীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। গতকাল শনিবার উপজেলার দৌলতদিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া বাজারের একটি গলিতে ১৫-১৬ বছর ধরে চা বিক্রি করেন ওই নারী। চা বিক্রির আয় দিয়ে তিনি ভাড়া বাসায় থেকে দুই মেয়েকে লেখাপড়া করান। ইতিমধ্যে বড় মেয়েকে বিয়েও দিয়েছেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে তাঁর দোকানে চা খেতে আসেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাসিন্দা আবদুর রব (৪০), জুয়েল শিকদারসহ (৩০) বেশ কয়েকজন। তাঁরা সেখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন। স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁদের মাদকসেবী ও পুলিশের কথিত সোর্স হিসেবে চেনেন। চা–বিক্রেতা ওই নারী পাশের আলমগীর হোসেনের দোকানে চা-বিস্কুট দিতে গেলে তাঁরা কৌশলে দোকানের একটি কৌটায় ৪০-৪২টি ইয়াবা বড়ি রেখে দিয়ে পুলিশকে খবর দেন। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এলে তাঁরাই ইয়াবা বড়িগুলো দেখিয়ে ওই নারীকে ধরিয়ে দেন। তখন ইয়াবা বড়িসহ ওই নারীকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। বিষয়টি জানাজানি হলে বাজার এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা চা–বিক্রেতা নারীর পক্ষে কথা বলেন। পাশের দোকানে সিসিটিভির ফুটেজ দেখার দাবি করেন তাঁরা। পরে পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে ইয়াবা বড়ি দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই নারীকে ছেড়ে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী মোটর চালক লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ওই নারী অত্যন্ত সৎ ও ভদ্র। এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ নেই। মাদক ব্যবসার মতো অপরাধের তিনি কোনোভাবেই জড়িত নন। ষড়যন্ত্র করে তাঁকে কেউ ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। ভিডিও ফুটেজে তাঁর স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গতকাল সন্ধ্যার দিকে থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ওই নারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই যুবকেরা নিয়মিতই আমার দোকানে চা খায়। কিন্তু তারা কেন আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করল, তা বুঝতে পারলাম না। আমি কোনো দিনই কোনোভাবে মাদকের সঙ্গে জড়িত না।’
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ভিডিও ফুটেজ যাচাই করে, এলাকার লোকজনের সুপারিশে এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই নারীকে গতকাল সন্ধ্যায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।