শ্রীপুরে গভীর রাতে নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন, বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ

গাজীপুরের শ্রীপুরের গোসিংগা ইউনিয়নের পূর্ব বেড়াবাড়ি গ্রামে নৌকার প্রতীকের একটি নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুড়ে যাওয়া চেয়ার পড়ে আছে মেঝেতে। বুধবার সকালেছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর-সদর একাংশ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেনের (ট্রাক) কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রুমানা আলী ওরফে টুসির একটি নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের পূর্ব বেড়াবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আজ বুধবার নৌকার প্রার্থী রুমানা আলী রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার ও থানায় পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দল সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুমানা আলীকে মনোনয়ন দিয়েছে। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে ইকবাল হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। গাজীপুর-৩ আসনে ইকবাল হোসেন ও রুমানা আলীসহ মোট সাত প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

লিখিত অভিযোগে শ্রীপুর উপজেলার বাউনী গ্রামের জাকির হোসেন, শরিফুল ইসলাম, জামান সরকার, মো. আলমগীর, মো. আজিজুল হক, মো. কিবরিয়া প্রধানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত আরও ২০ থেকে ২৫ জন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা শ্রীপুরের গোসিংগা ইউনিয়নের পূর্ব বেড়াবাড়ি এলাকায় নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প পুড়িয়ে দিয়েছে। আগুনে তিনটি চেয়ার, টেবিল, ব্যানার ও পোস্টার পুড়ে গেছে।

নৌকা প্রতীকের কর্মী ও গোসিংগা এলাকার বাসিন্দা নাজমুল আহসান ব্যাপারী প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাত দুইটা পর্যন্ত তাঁরা নির্বাচনী ক্যাম্পে ছিলেন। রাত তিনটার দিকে ক্যাম্পের পাশে রুবেল নামের এক দোকানদার প্লাস্টিকের পোড়া গন্ধ পেয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখেন, নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন জ্বলছে। এরপর আশপাশের লোকজনকে ডেকে তিনি আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পের আসবাব পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, ওই দোকানদার উঠে না এলে ক্যাম্প-লাগোয়া ৮ থেকে ১০টি দোকান পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।

অভিযোগের বিষয়ে গোসিংগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন সমন্বয়ক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এসব তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ। গতকাল তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের মারধর করেছেন। সেই অপরাধ ঢাকতে এখন তাঁরা তাঁদের (স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী) বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মো. আলমগীর হোসেন বলেন, অগ্নিসংযোগের সঙ্গে তাঁরা কোনোভাবেই জড়িত নন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের হয়রানি করতেই এমন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা ইয়াসমীন বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত করছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।