বরিশাল সিটি নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ফয়জুল করিম

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হয়েছেন দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম (মাঝে)। বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই দরবার শরিফে
ছবি: প্রথম আলো

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী ঘোষণা করেছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গুঞ্জন সত্যি করে দলটি মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমকে বেছে নিয়েছে। দলের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই দরবার শরিফে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। ফয়জুল করিম সম্পর্কে রেজাউল করিমের মেজ ভাই।

মনোনয়ন ঘোষণার সময় চরমোনাই পীর ও দলের আমির রেজাউল করিম বলেন, সাম্য, ন্যায়, সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই ইসলামী আন্দোলন লড়াই করছে। বরিশাল তাঁদের প্রাণের শহর। এই শহরের উন্নয়নে, এই শহরের মানুষের মর্যাদা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে তাঁদের প্রার্থী কাজ করবেন।

চরমোনাই পীর বলেন, আগে ইসলামী আন্দোলনকে নিয়ে অন্য ধর্মের মানুষের মধ্যে ভীতি ছিল। কিন্তু ইসলামী আন্দোলন হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানিতে বিশ্বাস করে না। কথার সঙ্গে কাজের মিল থাকায় এখন অন্য ধর্মাবলম্বীরাও ইসলামী আন্দোলনের নীতি-আদর্শের সঙ্গে শামিল হচ্ছেন। এর প্রমাণ গত কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পাওয়া যায়। দলের বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। বরিশাল সিটিতেও মানুষ ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীকে জয়ী করে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন চরমোনাই পীর।

দলীয় মনোনয়ন লাভের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ফয়জুল করিম বলেন, ‘আমি বরিশাল নগরবাসীর সেবক হিসেবে কাজ করতে চাই। আমি আশা করি নগরবাসীর কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার, সেটা আমরা পারবে। বরিশাল নগরের উন্নয়ন এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠাই হবে আমার প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য।’

দলীয় সূত্রে জানা যায়, এবার বরিশাল সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ইসলামী আন্দোলন ফয়জুল করিমের পাশাপাশি দলের বরিশাল জেলার সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুববিষয়ক সম্পাদক মুফতি সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়েরকেও বিবেচনায় রেখেছিল। তাঁরা দুজনই বর্তমান পীরের আপন ভাই। তাঁদের মধ্যে আবুল খায়ের চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান। সিটি নির্বাচন লক্ষ্য রেখে তাঁকে এবার দল থেকে ইউপি চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। মনোনয়ন দেওয়া হয় চরমোনাই পীরের আরেক ছোট ভাই সৈয়দ মুহাম্মাদ জিয়াউল করিমকে। তিনি বর্তমানে ওই ইউপির চেয়ারম্যান।

মেয়র পদে সম্ভাব্য দুই প্রার্থীর মধ্যে ফয়জুল করিমকে বেছে নেওয়া হতে পারে বলে কয়েক দিন ধরে গুঞ্জন চলছিল। শেষ পর্যন্ত তা-ই সত্যি হলো। ২০১৮ সালে বরিশাল সিটি নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন মাওলানা উবাইদুর রহমান। এবার তিনি অনেকটা অসুস্থ থাকায় নতুন প্রার্থী বেছে নিতে হয়েছে দলকে।

বরিশালের রাজনীতিতে এরই মধ্যে নিজেদের ভোটব্যাংক তৈরি করতে পেরেছেন বলে মনে করেন ইসলামী আন্দোলনের নেতারা। এ ছাড়া এবার এখানে বিএনপি নির্বাচনী মাঠে না থাকায় দলটির সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে। বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের নিজস্ব ভোটব্যাংক থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনেও। ওই বছর বরিশাল-৫ (সিটি করপোরেশন-সদর) আসনে ২৭ হাজারের বেশি ভোট পায় দলটি। ওই আসনে সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন মুফতি ফয়জুল করিম।