বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সর্বদলীয় অবস্থান
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। আজ রোববার সকাল থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। পরে মিছিল নিয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে প্রবেশপথ বন্ধ করে দেন এবং চারটি আসন বহালের দাবিতে স্লোগান দেন।
শুধু জেলা শহরেই নয়, বাগেরহাটের ৯টি উপজেলায় উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের সামনে একই ধরনের কর্মসূচি পালিত হয়। বিকেল চারটা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মোজাফফর রহমান আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক খাদেম নিয়ামুন নাসির, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ ইউনুস, নায়েবে আমির আবদুল ওয়াদুদ, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ফকির তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বিএনপি নেতা ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘সীমানা পরিবর্তনে বাগেরহাটবাসী এই সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেবে না। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। স্বল্প সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উচ্চ আদালতে রিট করার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। আশা করি, আগামী সপ্তাহে শুনানি হবে।’
১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। সে সময় সীমানা ছিল—বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট-মোল্লাহাট-চিতলমারী), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)। তবে নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত সীমানার গেজেট অনুযায়ী বর্তমান আসন হচ্ছে তিনটি—বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)।
হরতাল কর্মসূচি শিথিল
বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন দিনের হরতাল কর্মসূচি কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। সময় কমিয়ে আনার পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে হরতালের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।
আজ রোববার আসন পুনবর্হালের দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা সরকারি অফিসগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে এ কথা জানানো হয়।
কমিটির কো-কনভেনর ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, ‘সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালে অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে। কিন্তু রিকশা, মোটরসাইকেল এবং দোকানপাট খোলা থাকবে। আর অ্যাম্বুলেন্সসহ সকল জরুরি সেবা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। এ ছাড়া মঙ্গল ও বুধবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এক বেলা হরতাল থাকবে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার টানা দুদিনের হরতাল কর্মসূচি শেষে রোববার সরকারি দপ্তরগুলোর সামনে ঘেরাও, সোম, মঙ্গল ও বুধবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দিয়েছিল সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এবং মঙ্গল ও বুধবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হরতাল পালিত হবে। হরতালের সময় দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাজার খোলা থাকবে। জনগণের ভোগান্তি কমাতে রিকশা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল চলবে। তবে মহাসড়কে বাস, ট্রাক চলবে না। স্থানীয় যোগাযোগের ছোট সড়ক হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।