জামালপুরে হাসপাতালে হামলায় ৩ ইন্টার্ন চিকিৎসক আহত, অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি

হামলার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জামালপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনদের বিরুদ্ধে তিনজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলা ও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার ভোরে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে সকাল সাতটা থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।

এ ঘটনায় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান সদর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আহত তিন ইন্টার্ন চিকিৎসক মঞ্জুরুল হাসান, ফাহমিদুল ইসলাম ও তুষার আহমেদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ৩টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে জামালপুর সদর উপজেলার রশিদপুর এলাকা থেকে গুল মাহমুদ নামের এক মুমূর্ষু রোগীকে আনা হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করে দেন। রোগীকে যখন মেডিসিন ওয়ার্ডে নেওয়া হয়, তখন চিকিৎসকেরা নারী ওয়ার্ডে অন্য রোগী দেখছিলেন। ওই রোগীর খবর পেয়ে পরে চিকিৎসকেরা পুরুষ ওয়ার্ডে আসেন। এর আগে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা ওই রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত দেখতে পান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই রোগীর স্বজনেরা ইন্টার্ন চিকিৎসক মঞ্জুরুল হাসান ও ফাহমিদুল ইসলামের ওপর হামলা করেন। দ্বিতীয় তলায় থাকা আরেক ইন্টার্ন চিকিৎসক তুষার আহমেদ ওই ওয়ার্ডে যান। এ সময় তাঁকেও মারধর করা হয়। এ ছাড়া রোগীর স্বজনেরা চিকিৎসকদের একটি কক্ষের কম্পিউটার, প্রিন্টার, টেলিভিশন, রোগী দেখার যন্ত্রপাতি, চেয়ার ও টেবিল ভাঙচুর করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদ এবং দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সকাল সাতটা থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। আন্দোলনকারী জাকারিয়া জাকি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই রোগীর স্বজনেরা আমাদের তিনজন চিকিৎসককে ব্যাপক মারধর করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এটা না করা পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।’

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (এডি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, মুমূর্ষু অবস্থায় ওই রোগীকে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ওই রোগীকে দেখার সুযোগ না দিয়ে চিকিৎসকদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি অভিযোগ দিয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে।