নোয়াখালীতে বিএনপির হরতালে সরকারি কাজে বাধা ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে দুই মামলা

নোয়াখালী জেলার মানচিত্র

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় হরতাল চলাকালে সড়কে ব্যারিকেড দেওয়া নিয়ে বিএনপি-পুলিশ পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ট্রাকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় আসামি হিসেবে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ৮০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও অনেককে।

গতকাল রোববার রাতে পুলিশ ও পুড়ে যাওয়া ট্রাকের চালক বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। ঘটনাস্থল থেকে আটক যুবদলের কর্মী আশরাফুল ইসলামকে পুলিশের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া আগের বিভিন্ন মামলায় জেলার বেগমগঞ্জে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের চারজন, চর জব্বারে দুজন ও সদরে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সেনবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিএনপির ডাকা হরতাল চলাকালে উপজেলার ছমিরমুন্সিরহাটের পশ্চিমে এমপি রোড এলাকায় নেতা–কর্মীরা সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ব্যারিকেড সরাতে গেলে বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ শটগানের গুলি ছুড়ে ও ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সড়কে ব্যারিকেড ও পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গতকাল রাতে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আলীম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার যুবদলের কর্মী আশরাফুল ইসলামসহ ৪৫ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও অনেককে।

এ ছাড়া হরতালের আগের রাতে (গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায়) সেনবাগ উপজেলার সেবারহাটের পশ্চিম পাশে ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কে বালুবাহী ট্রাকে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ট্রাকের চালক ওমর ফারুক বাদী হয়ে থানায় আরেকটি মামলা করেছেন। মামলায় উপজেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও অনেককে।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার রাতে ট্রাকে অগ্নিসংযোগ এবং গতকাল হরতাল চলাকালে সড়কে ব্যারিকেড ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সড়কে ব্যারিকেড ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত।

জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক ওমর ফারুক আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেছেন, পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযানে জেলার বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা বর্তমানে বাড়িছাড়া। গতকাল রাতেও জেলার সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সদর, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে, তবে অভিযানে কতজনকে আটক করা হয়েছে, তা তাঁরা নিশ্চিত হতে পারেননি।

বিএনপির নেতা ওমর ফারুক বলেছেন, কোনো কারণ ছাড়াই বর্তমানে বিএনপির নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। গতকাল জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ফজলে এলাহী ওরফে ভিপি পলাশ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গিয়েছিলেন শনিবার রাতে গ্রেপ্তার দলীয় নেতা–কর্মীদের দেখতে। সেখান থেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। পরে তাঁকে সুধারাম থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।