আওয়ামী লীগের বিজন ছাড়া অন্যদের ভোট দিলে প্রতিরোধের হুমকি সাবেক এমপির

জামালপুর সদর উপজেলার ছোনটিয়া বাজার এলাকার কাচারী মাঠে গতকাল রোববার রাতে বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনছবি: সংগৃহীত

জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী বিজন কুমার চন্দকে ছাড়া অন্য কাউকে ভোট দিলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগের নেতা–কর্মীদের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা হবে। জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়ে মোজাফফর হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ ছাড়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রার্থী বিজন কুমার চন্দকেও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।  

আগামী বুধবার প্রথম ধাপে এখানে ভোট গ্রহণ করা হবে। চেয়ারম্যান পদে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দসহ পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল রোববার রাতে সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের ছোনটিয়া বাজার এলাকার কাচারী মাঠে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বিজন কুমার চন্দের পক্ষে ছাত্রসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেন। তাঁর বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

৬ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘আমি বলতে চাই, বিজন বাবু (মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী) ছাড়া তোমরা যদি আর কাউকে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করো, তাহলে আমার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও সর্বস্তরের জনগণ তোমাদের প্রতিরোধ করবে ইনশা আল্লাহ। তাই বলতে চাই, আর দেরি নাই, আর মাত্র দুইটা দিন আছে। এখনো সময় আছে, আসো আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের পিছে আসো, আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হও। বিজন বাবুর (মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী) পিছে আসো, বিজন বাবুর (মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী) মোটরসাইকেল মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য ভোট চাও। তা না হলে মানুষ ক্ষমা করবে না। আবার চেয়ারম্যানগিরি করতে চাও। করলে করতে পারবা বিজন বাবু, যদি উপজেলা চেয়ারম্যান হই, তাহলে পারবা, নইলে পারবা না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজ সোমবার মোজাফফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ওই ধরনের বক্তব্য দিইনি।’ ভিডিওর বক্তব্যের বিষয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই বক্তব্যের বিষয়টি নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে একটি লিখিত অভিযোগও পেয়েছি। ওই বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ হয়েছে।’

শানিয়াজ্জামান তালুকদার আরও বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের জন্য কেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পত্র প্রেরণ করা হবে না, সে জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ অফিস চলাকালীন প্রার্থীকে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।