বিএনপি লাঠি নিয়ে এলে, খেলা কাকে বলে, তা দেখানো হবে: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি সমাবেশের নামে সমাবেশস্থলে এক সপ্তাহ আগে থেকেই কাঁথা-বালিশ, লেপ-তোশক, কম্বল, পাটি নিয়ে জড়ো হয়। শুধু তাই নয়, তারা মশার কয়েল পর্যন্ত নিয়ে এসে শুয়ে থাকে। আমরা তাদের ১০ তারিখের (ডিসেম্বর) কর্মসূচিতে কোনো বাধা দিতে চাই না। তবে এবার খেলা হবে। খেলা হবে, যদি তারা সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, আগুন আর লাঠি নিয়ে আসে, তবে খেলা কাকে বলে, তা দেখানো হবে।’
নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘এবার খেলা হবে, মাস্টারমাইন্ড হাওয়া ভবনের ছোকরা তারেকের বিরুদ্ধে ।’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, জনসমুদ্র কাকে বলে নেত্রকোনায় এসে দেখে যান। আপনারা কয়েকজন লোক ভাড়া করে এনে বক্তব্যে বলেন বিএনপির জনসমুদ্র। এখানে আসেন, দেখেন, মানুষ কারে কয়।’
শেখ হাসিনার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই উন্নয়ন টিকে রাখতে হলে বারবার শেখ হাসিনা সরকারকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনতে হবে। তা না হলে এই বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে আবার ধ্বংসযজ্ঞ হয়ে যাবে। আমাদের ক্ষমতার উৎস বন্দুকের নলে নয়। জনগণের সমর্থনেই আওয়ামী লীগ টিকে আছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনাই একমাত্র গণতন্ত্রের নেতা। তাঁর মতো আর কেউ নেই। আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হবে, তা না হলে খবর আছে।’ তিনি বক্তব্যের শেষে আবারও বলেন, ‘খেলা হবে। কী ভাইয়েরা, কিসের খেলা হবে? গণতন্ত্রবিরোধীদের বিরুদ্ধে, আন্দোলনের নামে যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় তাঁদের বিরুদ্ধে খেলা হবে।’
এর আগে দুপুরে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়র রহমান খান। সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আহম্মদ হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সদস্য মারুফা আক্তার ও রেমন্ড আরেং।
দীপু মনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বিএনপি গলাটিপে হত্যা করেছে। এখন আর সেই পদ্ধতিতে নির্বাচনের সুযোগ নেই। সারা বিশ্বে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই শেখ হাসিনার অধীন নির্বাচন হবে।
সম্মেলন পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান। সম্মেলনে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্য শেষে কমিটি ঘোষণা করেন। এতে মো. আমিরুল ইসলামকে সভাপতি মনোনীত করা হয়েছেন। আর মো. শামছুর রহমান ওরফে ভিপি লিটনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
নতুন সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম আগের কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমান সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের তখনকার সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সম্মেলনে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মতিয়র রহমান খানকে সভাপতি ও মো. আশরাফ উদ্দিন খানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। বিদায়ী কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ছয়জন সভাপতি পদে এবং সাধারণ পদে অন্তত আটজন পদপ্রত্যাশী ছিলেন।