নরসিংদীতে পৃথক স্থানে ট্রেনে কাটা পড়ে দুজনের মৃত্যু

ট্রেন দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর খবরে স্থানীয়দের ভিড়। আজ শুক্রবার সকালে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে
ছবি: প্রথম আলো

নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ও স্টেশনসংলগ্ন রেলক্রসিংয়ে পৃথক দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। প্ল্যাটফর্মে ট্রেনে উঠতে গিয়ে এক কিশোর ও হাঁটতে বের হয়ে রেলক্রসিংয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

আজ শুক্রবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া মো. নেছার আহমেদ ওরফে ফরিদ (৬৫) নরসিংদীর শহরের গাবতলী এলাকার বাসিন্দা। তিনি রায়পুরা উপজেলার চরমধুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। মারা যাওয়া কিশোরের নাম শাকিল হক (১৫)। তাঁর বাবার নাম জুয়েল হক। বাড়ি জামালপুর।

রেলওয়ে পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, ভোরে ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিনের মতো আজও হাঁটতে বের হয়েছিলেন নেছার আহমেদ। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আরশীনগর রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ক্রসিংয়ের গেটম্যান ও আশপাশের লোকজন উচ্চ স্বরে তাঁকে ডেকে নিষেধ করলেও তা তাঁর কানে পৌঁছায়নি। ওই সময় ঢাকাগামী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়েন তিনি। এতে মাথার ওপরের অংশ কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনটির কোনো যাত্রাবিরতি না থাকলেও চালক ট্রেন থামিয়ে স্টেশনমাস্টার ইমন খানকে দুর্ঘটনার খবর জানান।

স্টেশনমাস্টারের মাধ্যমে খবর পেয়ে নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থল থেকে নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেন। এ সময় উপস্থিত লোকজন তাঁর লাশ শনাক্ত করে পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। পরে নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ হস্তান্তর করে রেলওয়ে পুলিশ।

এদিকে দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে স্টেশনটির ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ঢাকাগামী নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠতে যাচ্ছিলেন এক কিশোর যাত্রী। এরই মধ্যে ওই ট্রেন যাত্রা শুরু করলে কিশোরটি পা পিছলে প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের ফাঁকে পড়ে যায়। ট্রেনটি বেশ কিছুদূর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ায় তাঁর শরীরে ক্ষত হয় এবং মাথায় আঘাত পায়। ট্রেনটি চলে যাওয়ার পর স্টেশনে অবস্থান করা লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর আগে ওই কিশোর নিজের পরিচয় সম্পর্কে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছে, তার নাম শাকিল হক (১৫)। তার বাবার নাম জুয়েল হক। বাড়ি জামালপুর। বর্তমানে তাঁর লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।

নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মো. নেছার আহমেদের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্যদিকে নিহত কিশোর শাকিলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার ইমন খান বলেন, দুটি ঘটনাই দুঃখজনক। রেললাইন পার হওয়া ও ট্রেনে ওঠার ক্ষেত্রে সবাইকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।