মুলাদীতে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২, ‘নিখোঁজ’ ব্যক্তি হাসপাতালে

বরিশাল জেলার মানচিত্র

বরিশালের মুলাদী উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দুজন হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত আরেকজনকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার ছবিপুর ও বাটামারা ইউনিয়নের সীমানার চাকলা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মুলাদী উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব তয়কা গ্রামের সেলিম ব্যাপারীর ছেলে হেলাল ব্যাপারী (৪০) এবং ছবিপুর ইউনিয়নের বালিয়াতলী গ্রামের জলিল কবিরাজের ছেলে আলমগীর কবিরাজ (৫০)। হামলায় গুরুতর আহত হন নিহত হেলাল ব্যাপারীর বড় ভাই কামাল ব্যাপারী। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

বরিশালের পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার দুপুরে দুজনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় কয়েকজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে স্থানীয় দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জেরে স্থানীয় দাদন হাওলাদার নামের এক ব্যক্তির ভাই আনিস হাওলাদার কয়েক বছর আগে খুন হন। ওই ঘটনায় মামলার আসামি ছিলেন হেলাল ব্যাপারী, তাঁর বড় ভাই কামাল ব্যাপারী ও আলমগীর কবিরাজ। ওই ঘটনার পর এই তিনজন এলাকায় আসতে পারতেন না। ১০-১৫ দিন আগে তাঁরা এলাকায় ফেরেন। এর পর থেকেই উভয় পক্ষে উত্তেজনা চলছিল।

সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ছবিপুর ও বাটামারা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী চাকলা বাজার এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় হেলাল ব্যাপারী ও আলমগীর কবিরাজকে প্রতিপক্ষের লোকেরা বেধড়ক কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করলে ঘটনাস্থলে তাঁরা মারা যান। হেলালের বড় ভাই কামাল ব্যাপারীও আহত হন। তাঁকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় খবর পাওয়ার পর মুলাদী থানার পুলিশ আজ ভোররাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ প্রথমে হেলাল ব্যাপারী ও পরে আলমগীর কবিরাজের লাশ উদ্ধার করে।

আজ সকালে ছবিপুর ও বাটামারা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী চাকলা বাজার এলাকা পরিদর্শন করেছেন বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দুই পক্ষের পুরোনো বিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাকলা বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, হেলাল ব্যাপারী ও আলমগীর কবিরাজের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। চাকলা বাজার এলাকায় পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।