জাল ভোট দেওয়ার সময় শামীম ওসমানের দুই কর্মীকে কারাদণ্ড

কারাগার
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে একটি ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের দুই কর্মীকে আটক করে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারিক আদালত। সেই সঙ্গে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আরও পড়ুন

আজ রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের দেলপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে জাল ভোট প্রদানের সময় আটক দুজনকে নির্বাচনী মামলায় নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাহান বিথীর আদালত এই কারাদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পাগলা দেলপাড়া এলাকার মো. ইস্রাফিল এবং পূর্ব দেলপাড়া এলাকার জামাল হোসেন।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২–এর ৭৪ (৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি একই ভোটকেন্দ্রে একাধিকবার ভোট প্রদান করেন বা ভোট প্রদানের জন্য ব্যালট চান, তাহলে ওই ব্যক্তি বেআইনি কার্যের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হবেন। এই অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অনধিক সাত বছর এবং অন্যূন দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। সেই সঙ্গে অর্থদণ্ডেরও বিধান রয়েছে।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে (আড়াইহাজার) বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগের মামলায় জাহাঙ্গীর সিকদার ওরফে জোটনকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট মো. নূর মহসীন। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। জাহাঙ্গীর সিকদার জোটন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী ও দলের সভাপতিমণ্ডলীয় সদস্য আলমগীর সিকদার ওরফে লোটনের ছোট ভাই।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২–এর ৭৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি নির্বাচনী এলাকায় ভোট গ্রহণ শুরুর পূর্ববর্তী আটচল্লিশ ঘণ্টা এবং ভোট গ্রহণের সমাপ্তির আটচল্লিশ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে নির্বাচনী এলাকায় কোনো জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা এসবে যোগ দিতে পারবেন না। কোনো আক্রমণমাত্মক কার্যকলাপ বা বিশৃঙ্খলামূলক আচরণ করতে পারবেন না। এই অপরাধে জাহাঙ্গীর হোসেন জোটনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী (কেটলি) শাহজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে টাকা বিতরণের সময় হাতেনাতে আটক দুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারিক আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। বিকেলে নির্বাচনী মামলায় নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসাদ বেগমের আদালত এ দণ্ড প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আগারপাড়া এলাকার মো. সবুজ ও একই এলাকার মো. নাঈম।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২–এর ৭৩ (২খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি ঘুষ আদান–প্রদান, ছদ্ম পরিচয় বা অবৈধ প্রভাব খাটানোর অপরাধ করেন, তাহলে তিনি দুর্নীতির অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হবেন। এই অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অনধিক সাত বছর এবং অন্যূন দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। সেই সঙ্গে অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী ইস্তাফিজুল হক আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনী মামলায় কয়েকজনকে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন বিচারিক আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।