বসুরহাটে বাস না ছাড়ায় কাউন্টারে হামলা-ভাঙচুর, চারজন যাত্রী নিয়ে বাস চালাতে বাধ্য করলেন হামলাকারীরা

কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে আওয়ামী লীগের শান্তি মিছিল। আজ সকালে
ছবি সংগৃহীত

বিএনপির ডাকা অবরোধের কারণে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অভিমুখী যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে না যাওয়ায় চারটি টিকিট কাউন্টারে হামলা-ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা সবাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী বলে জানা গেছে। কাদের মির্জা একই সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির কারণে গতকাল মঙ্গলবার থেকে বসুরহাট বাসস্ট্যান্ডের সব কটি পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ সকাল ১০টার দিকে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার ২০ থেকে ২৫ জন অনুসারী অতর্কিতে বাসস্ট্যান্ডে যান।

তাঁরা এ সময় বাসস্ট্যান্ডে স্টার লাইন পরিবহন, ড্রিম লাইন পরিবহন ও বসুরহাট এক্সপ্রেস পরিবহনের কাউন্টারে ব্যাপক হামলা-ভাঙচুর চালান। এ সময় হামলা-ভাঙচুরের ছবি কিংবা ভিডিও যাতে কেউ ধারণ করতে না পারেন, সে জন্য হামলাকারীরা কাউন্টারের আশপাশে পাহারা বসান। পরে বেলা ১১টার দিকে হামলাকারীরা স্টার লাইন পরিবহনের একটি বাস চারজন যাত্রী নিয়ে স্ট্যান্ড ছাড়তে বাধ্য করেন।

স্টার লাইন পরিবহনের কর্মকর্তা মো. মহিন প্রথম আলোকে বলেন, সকালে একদল দুর্বৃত্ত এসে আকস্মিক বাস কাউন্টারে ভাঙচুর শুরু করে। তারা এ সময় তাঁদের বসুরহাট এক্সপ্রেস, ড্রিম লাইন স্পেশাল ও স্টার লাইন পরিবহনের তিনটি কাউন্টারের আসবাব, টেলিভিশন, সিসিটিভি ক্যামেরাসহ অন্যান্য সামগ্রী ভাঙচুর করে। তিনি অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা এ সময় কাউন্টারে কর্মরত ব্যবস্থাপক ফখরুল ইসলাম ও মামুনকে মারধর করেন। পরে বাধ্য হয়ে চারজন যাত্রী নিয়ে স্টার লাইন পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

হামলা-ভাঙচুরের বিষয়ে জানার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে একই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না।

এ বিষয়ে জানার জন্য জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলামকে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন না ধরে খুদে বার্তা পাঠাতে বলেন। খুদে বার্তা পাঠানোর পর তিনি কোনো জবাব দেননি। পরে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন। তারা ফিরে এলে বিস্তারিত জানা যাবে।