শ্রীমঙ্গলে ছাত্রলীগের আনন্দমিছিলে সংঘর্ষ, সভাপতিসহ আহত ৩

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির আনন্দমিছিলে সংঘর্ষের পর পদবঞ্চিতরা মিছিল বের করলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। মঙ্গলবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ছাত্রলীগের নবগঠিত তিনটি কমিটির নেতারা আনন্দমিছিল বের করলে পদবঞ্চিতদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি মো. সাইদুর রহমান ওরফে সুজাত ছুরিকাহত, একই কমিটির সহসভাপতি নেছার আহমদ ও ছাত্রলীগের কর্মী জোবায়ের আহমদ গুরুতর আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের হবিগঞ্জ সড়কে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিকে এ সংঘর্ষের পর শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করেন। সেখানে নবগঠিত কমিটি বাতিল করার দাবি জানান তাঁরা। এ সময় এ মিছিলের কারণে শহরের যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। শহরের হবিগঞ্জ সড়কের অনেক দোকানপাটের শার্টার বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এর আগে গত রোববার শ্রীমঙ্গল উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেয় মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগ। ৪৮ সদস্যবিশিষ্ট শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটির সভাপতি পদ পেয়েছেন মো. সাইদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আকাশ রঞ্জন দেব। ৩১ সদস্যবিশিষ্ট পৌর ছাত্রলীগ কমিটির সভাপতি পদ পেয়েছেন উজ্জ্বল কান্তি দাশ এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তসলিম আহমেদ। ২৮ সদস্যবিশিষ্ট শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ কমিটির সভাপতি হয়েছেন আজিজুর রহমান ওরফে নাইম এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সাগর মিয়া।

আমরা শ্রীমঙ্গলের ছাত্রলীগের জন্য সুন্দর কমিটি গঠন করে দিয়েছিলাম। এখানে ছাত্রলীগের মিছিলে কে বা কারা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন, সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি। সংগঠনের কেউ জড়িত থাকলে আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।
মো. মাহবুব আলম, সাধারণ সম্পাদক, মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগ

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে নবগঠিত তিন কমিটির নেতারা একটি আনন্দমিছিলের আয়োজন করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মিছিলটি শহরের হবিগঞ্জ সড়কে এলে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি থেকে একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর ছুরিকাহত হন এবং সঙ্গে আরও দুজন আহত হন।

এদিকে ছাত্রলীগের একাধিক কর্মী বলেন, নবগঠিত কমিটিতে অনেকেই পদ পাননি। অনেকে পদ পেলেও কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়ায় কমিটি ঘোষণা করার পর থেকেই পদবঞ্চিতদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। এরই মধ্যে আনন্দমিছিলের খবর পেয়ে অনেকেই সংঘর্ষের জন্য ওত পেতে থাকেন।

আহত সাইদুর রহমানের বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁর সঙ্গে থাকা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু দেব বলেন, ‘সুজাতের শরীরে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁকে আমরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।’

মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুব আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শ্রীমঙ্গলের ছাত্রলীগের জন্য সুন্দর কমিটি গঠন করে দিয়েছিলাম। এখানে ছাত্রলীগের মিছিলে কে বা কারা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন, সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি। সংগঠনের কেউ জড়িত থাকলে আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।’

শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এই ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেননি।