প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় গতকাল রোববার আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় মাছপাড়া বাজার এলাকায় ইলেকট্রনিক পণ্যের এক দোকান ভাঙচুর করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীর পাংশায় আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় একটি ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে উপজেলার মাছপাড়া বাজার ও সুলতান মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় লোকজন বলেন, মাছপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরুজ মৃধা মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে লড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলামের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার তাজবীর হাসানও চেয়ারম্যান পদে লড়বেন বলে জানিয়েছেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে।

দলের কর্মীরা বলেন, গতকাল বিকেলে পাংশা কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য, রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। মাছপাড়া থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মৃধা মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আসে। তাজবীর হাসানও ভ্যান ও মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

সুরুজ মৃধার অভিযোগ, অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে মাছপাড়া বাজারে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাঁর ছেলের নেতৃত্বে তাঁর মোটরসাইকেলের বহরে হামলা চালান। এতে মোটরসাইকেল চালক তপু মণ্ডল (৩২), আরোহী আরজেন সরদার (৩০) ও মিরাজ মণ্ডল (৩২) গুরুতর আহত হন। এ সময় তাঁর সমর্থক হিরকের ইলেকট্রনিক দোকান ভাঙচুর করেন হামলাকারীরা। এরপর পাশের বড়রিয়া গ্রামে তাঁর কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।

সুরুজ মৃধার আত্মীয় শেখ কামাল হোসেন বলেন, ‘অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পর রাত ১০টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজন আমার বাড়িতে হানা দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা চলে যান। রাত ১১টার দিকে সুজন নামের এক কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করেন।’

অভিযোগের বিষয়ে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলাম বলেন, তাঁর ছেলে খন্দকার তাজবীর হাসান যাতে মাছপাড়া ইউপি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, এ জন্য প্রতিপক্ষ নানা ধরনের পরিকল্পনা করছে। তাঁর লোকজন অনুষ্ঠানে যাতে যোগ দিতে না পারেন, মাছপাড়া বাজারে তাঁদের ভ্যান ও মোটরসাইকেলের বহর আটকে দেন। আবার ফেরার পথে মাছাপাড়া বাজারে সুরুজ মৃধার লোকজন তাঁদের চড়াও হয়ে তাঁদের মারধর করেন ও গরম পানি ছুঁড়ে মারেন। তখন তাঁর লোকজন প্রতিহত করেন। এতে জিহাদ শেখ (২৮) ও আলামিন শিকদার (২৪) নামের দুই কর্মী গুরুতর আহত হন। তাঁদের পাংশা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

পাংশা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় সুরুজ মৃধার ভাই সরোয়ার মৃধা আজ সোমবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া মাছপাড়া এলাকায় পুলিশ টহলে রয়েছে। পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক আছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।