২৫টি গাছ বিক্রির অভিযোগ

কৃষক লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের নির্দেশে গাছগুলো কেটে বিক্রি করা হয়।

বিদ্যালয়ের মাঠের ২৫টি গাছ কেটে বিক্রি করা হয়েছে। রোববার সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার শিমুলদাইড় দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার স্থানীয় কৃষক লীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের ২৫টি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার উপজেলার চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলদাইড় দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৫টি আকাশমণি গাছ কেটে বিক্রি করার ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন কাজীপুর উপজেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি, চালিতাডাঙ্গা ইউপির চেয়ারম্যান ও শিমুলদাইড় দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, আতিকুর রহমান ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের নির্দেশে তাঁদের লোকজন গত শনিবার থেকে গাছ কাটা শুরু করেন। রোববার কাটা গাছগুলো মোট ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তাঁরা।

‘আমরা গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরেছি। যাঁরা গাছগুলো কেটেছেন, তাঁদের নিজেদের জায়গা বলে দাবি করছেন। তাঁরা বলছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়টির কোনো জায়গা নেই। কিন্তু নিজস্ব জমি ছাড়া বিদ্যালয় কখনো সরকারি করা হয় না। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। খুব দ্রুতই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জাহিদ হাসান সিদ্দিকী, কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)

শিমুলদাইড় দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান বলেন, স্কুলের পক্ষ থেকে মাঠে গাছগুলো লাগানো হয়েছিল। ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ তাঁদের শরিকেরা নিজেদের সম্পত্তি দাবি করে গাছগুলো কেটেছেন।

চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আমরা সবাই শরিক। ওই স্কুলের জমি আমাদের বাপ-দাদার নামে রেকর্ড করা। তাই স্কুল কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমানের নির্দেশে গাছগুলো কেটে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।’

কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ হাসান সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরেছি। যাঁরা গাছগুলো কেটেছেন, তাঁদের নিজেদের জায়গা বলে দাবি করছেন। তাঁরা বলছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়টির কোনো জায়গা নেই। কিন্তু নিজস্ব জমি ছাড়া বিদ্যালয় কখনো সরকারি করা হয় না। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। খুব দ্রুতই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমানের মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের কোনো জমি নেই, আমাদের জায়গার ওপরই স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত। রেকর্ডপত্র আমাদের নামে। এ কারণে আমাদের শরিকেরা গাছগুলো কেটেছে।’

কাজীপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি জানার পর সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে এবং বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।